Sunday, February 16, 2025
HomeBreaking News‘সিপিএমের কাছে হেরে গিয়েছিল, জোর করে জেতানো হয়েছে তৃণমূলপ্রার্থীকে’, ভাইরাল অডিও

‘সিপিএমের কাছে হেরে গিয়েছিল, জোর করে জেতানো হয়েছে তৃণমূলপ্রার্থীকে’, ভাইরাল অডিও

বর্ধমানঃ গণনাকেন্দ্রে ‘গায়ের জোর’ দেখিয়ে শাসক দলের লোকজন বিরোধী প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়েছে। এমন অভিযোগ এনে বিরোধীরা যখন হাই কোর্টের দ্বারস্থ সেই সময়েই শোরগোল ফেলে দিয়েছে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও। বৃহস্পতিবার রাতে ১৩ মিনিট ২২ সেকেণ্ডের ওই অডিও প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। চাপ দিয়ে গণনাকেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থীদের হারিয়ে দেওয়া নিয়ে বর্ধমান ১ ব্লকের দুই তৃণমূল কর্মীর কথোপকথনের ওই অডিওই এখন সিপিএমের কাছে বড় হাতিয়ার হয়ে গিয়েছে। যদিও এই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ

পঞ্চায়েত ভোটের দিন থেকে শুরু করে গণনার দিনেও রাজ্যে অশান্তি অব্যাহত থাকে। বাদ যায়নি পূর্ব বর্ধমানও। গণনা পর্ব মিটতেই বৃহস্পতিবার রাতে যে অডিও ভাইরাল হয় সেটি হল দু’জন তৃণমূল কর্মীর কথোপকথন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় তাঁদের একজন বর্ধমান ১ ব্লকের সদর কামনাড়ার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী তন্ময় ঘোষ। অডিওর বিষয়ে এদিন তন্ময়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সম্পূর্ণ পাল্টি খেয়ে বলেন,“লোক মুখে কিছু কথা শুনে বৃস্পতিবার দুপুরে আলোচনা করেছিলাম। পরে খোঁজ নিয়ে দেখেছি ওই সবই মিথ্যা। সঠিক গণনাতেই   তৃণমূল প্রার্থীরা জিতেছে”।

তবে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে কথোপকথন অনুযায়ী, বর্ধমান ১ ব্লকের খেতিয়া ও বাঘাড় ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ‘গোহারা’ হেরেছে। যে সব আসনে সিপিএম জিতেছিল, সেই সব আসনে জয়ী সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে জোর করে তৃণমূল প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে। খেতিয়া অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি অশোক দত্ত সেখানকার ১০ নম্বর আসনে দাঁড়িয়েছিলেন। কথপোকথনে উঠে এসেছে – অশোক হেরে গেলেও তৃণমূলের দুই নেতার চাপে গণনাকর্মীরা জয়ী সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে অশোক দত্তকে ২৮ ভোটে জেতানো হয়েছে। এ নিয়ে অশোক দত্ত এদিন বলেন,“সব মিথ্যা। গ্রামের মানুষ আমায় ভোট দিয়েছে তাতেই আমি জিতেছি। বন্ধুদের মাঝে তৃণমূলের কেউ কিছু আলোচনা করল, আর সেটাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, এটা ঠিক নয়”।

সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বিস্ফোরক অডিও কথোপকথনে একজন অপর জনকে আরও বলছেন, ‘গণনাকেন্দ্রে প্রথমে বিরোধীদের মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। গণনা শুরু হওয়ার পরে যখন দেখা যায় তৃণমূলের প্রার্থীরা হারছে, তখন নেতারা গিয়ে গণনাকেন্দ্রের কর্মীদের চাপ দিয়ে ফল পাল্টে দিয়ে তৃণমূলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়া করায়’। তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লকের যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য ও জয়হিন্দ বাহিনীর জেলা সভাপতি রবীন নন্দী গণনাকেন্দ্রের কর্মীদের ‘চাপ’ দিয়েছে বলেও অডিওর কথোপকথনে শোনা যাচ্ছে। উল্টো দিকের যুবকটিকে এর পর বলতে শোনা যায়, বিরোধীদের গণনাকেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়ে জয় এখন হয়ত নিশ্চিৎ করা গেল, কিন্তু লোকসভা পরিস্থিতি ‘কঠিন’ হয়ে যাবে।

এই ভাইরাল অভিও কথোপকথন বিষয়ে তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লকের যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য ও জয়হিন্দ বাহিনীর জেলা সভাপতি রবীন নন্দীর সাফাই, ‘অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় কথাবার্তা বলেছে। ওই অডিওর কোনও ভিত্তি নেই’। আর তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লকের সভাপতি কাকলি গুপ্ত বলেন, ‘ওই অডিও আমরা শুনেছি। দু’জনকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। ওই তৃণমূল কর্মীরা কেন মিথ্যা কথা বলে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন, তা জানা হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সিসি ক্যামেরার সামনে নিরপেক্ষভাবেই গণনা হয়েছে’।

অপর দিকে জেলা সিপিএমের সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওয় তৃণমূল কর্মীদের কথাবার্তাই প্রমাণ করছে, তৃণমূল গণনাকেন্দ্রেও ভোট লুট করে পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে।”

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular