পদ্মশ্রী পেলেন মাথাভাঙ্গার ভাওয়াইয়া শিল্পী

মাথাভাঙ্গা: পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম নির্বাচিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন মাথাভাঙ্গা শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ভাওয়াইয়া সংগীত শিল্পী গীতা রায় বর্মন। মাথাভাঙ্গা মহকুমা থেকে তিনিই প্রথম পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বিবেচিত হলেন। গীতা রায় বর্মন জানান, “গতকাল রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ সংবাদ-এর প্রতিনিধির কাছ থেকে তিনি প্রথম পদ্মশ্রী পাওয়ার সংবাদ পাই। খবরটি শুনে বিশ্বাসই করতে পারিনি। পরে ছেলে ইন্টারনেট ঘেঁটে তালিকায় নাম দেখার পর আশ্বস্ত হই।”

শীতলকুচি ব্লকের ছোটশালবাড়ি গ্রামে খুব ছোটবেলায় রেডিওতে বাংলাদেশের রংপুরের তিস্তাপাড়ের ভাওয়াইয়া গান শুনে সেই গানের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। একটু বড় হতেই গ্রামে অনুষ্ঠান করতে আসা প্রখ্যাত ভাওয়াইয়া শিল্পী আয়েশা সরকার এবং নগেন শীল শর্মার গান শুনে তাঁদের মতো শিল্পী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল গীতাদেবীর। পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপকের তালিকায়  স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। স্বামী মনোরঞ্জন বর্মন পেশায় উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এবং দুই ছেলেকে নিয়ে গীতাদেবীর সংসার। ভাওয়াইয়া সংগীত চর্চার পাশাপাশি নিজের বাড়িতে ভাওয়াইয়া নৃত্য সহ নানা লোকনৃত্যের প্রশিক্ষণ দেন তিনি। ভাওয়াইয়া সংগীতের জন্য পদ্মসম্মান ভাওয়াইয়া সংগীতের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল বলে গীতাদেবী জানান। এতদিন পর্যন্ত রাজ্য ভাওয়াইয়া সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় রাজ্যসেরা হওয়া সম্মানই ছিল তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় সম্মান।

স্থানীয় আজাদ হিন্দ সংঘের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। তার পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্তিতে শহরের পচাগড় তেপথিতে আজাদ হিন্দ সংঘের উদ্যোগে নেতাজী মূর্তির প্রাদদেশে এদিন গীতা রায় বর্মনকে দিয়েই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। তাঁকে সংবর্ধনা দিতে বাড়িতে যান মাথাভাঙ্গার বিজেপি বিধায়ক সুশীল বর্মন ও শীতলকুচির বিজেপি বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন সহ বিজেপি নেতৃত্ব। অপরদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস কোচবিহার জেলা কমিটির চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনসহ তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও তাঁর বাড়িতে গিয়ে পদ্মশ্রী সম্মান প্রাপ্তির জন্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

গীতা রায় বর্মন বলেন, ‘সরকারের কাছে আবেদন এই সংগীতচর্চার জন্য আরও প্রচার ও প্রসার দরকার। এই সংগীতচর্চাকে উৎসাহিত করার জন্য পুরস্কার মূল্যবৃদ্ধি করার পাশাপাশি প্রবীণ ভাওয়াইয়া শিল্পীদের ভাতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।‘