উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: অমৃতের সন্ধানে কুম্ভে আসেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু মেলা মানে তো কেবল আনন্দ বা পুণ্য সঞ্চয় নয়। মেলা মানে ভিড়। আর ভিড় মানেই আবর্জনার স্তূপ। সেই মেলা যদি মহাকুম্ভ (Maha Kumbh) হয়, তাহলে তো কথাই নেই। গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর ত্রিবেণী সঙ্গমে আয়োজিত দেড়মাসের মেলায় দেশবিদেশ থেকে ভিড় করেন পুণ্যার্থীরা। তাঁদের ফেলে যাওয়া নোংরা সাফ করার দায়িত্ব এবার কাঁধে তুলে নিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) (ISRO) এবং ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার (বার্ক) (BARC)।
১২ বছর পরে আবার পূর্ণকুম্ভের আয়োজন হতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে। প্রয়াগরাজে গঙ্গার তীরে ৪৫ দিনের এই মেলা শুরু হবে ১৩ জানুয়ারি থেকে। চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ বছরের মেলা বসছে ১০ হাজার একর জায়গাজুড়ে। যেখানে প্রায় ৪০ কোটি দর্শনার্থীর সমাগম আশা করা হচ্ছে। এছাড়া মেলার গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত শিবির করে থাকবেন ৫০ লক্ষ তীর্থযাত্রী এবং সাধুসন্ত সম্প্রদায়।
এই বিপুল জমায়েতে দৈনিক যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য জমবে ত্রিবেণী তীরে, তা পরিষ্কার করা বড় চ্যালেঞ্জ উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের কাছে। যোগী সরকার ইতিমধ্যে মেলায় প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকা খরচ করার কথা ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ১,৬০০ কোটি টাকা জল ও বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়াগরাজ প্রশাসন সূত্রে খবর, মেলায় জমা প্রতিদিনের মানব বর্জ্য ও ধূসর জল (রান্না, ধোয়া ও গোসলের জল) নিকাশির জন্য সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ইসরো এবং বার্কের উন্নত প্রযুক্তির।
গঙ্গা-দূষণ তীরবর্তী অঞ্চলের পরিবেশ পরিচ্ছন্নতার কথা মাথায় রেখে এবার ১ লক্ষ ৪৫ হাজার শৌচাগার বসানো হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ হাজার শৌচাগার ফাইবার-রিইনফোর্সড পলিমার (এফআরপি) এবং ২২ হাজার প্রিফ্যাব্রিকেটেড স্টিলের। ধূসর জল নিষ্কাশনের জন্য তৈরি করা হয়েছে ২০০ কিলোমিটার অস্থায়ী নিকাশি ব্যবস্থা। ২৫০টি সেসপুল গাড়ি বর্জ্য পরিবহণের কাজ করবে। বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে হাইব্রিড গ্র্যানুলার সিকোয়েন্সিং ব্যাচ রিঅ্যাক্টর (এইচজিএসবিআর) ও জিওটিউব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মেলা এলাকা ২৫টি সেক্টরে ভাগ করে স্বতন্ত্র জল সরবরাহ, নিকাশি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার যাবতীয় ধূসর জল ৭৫টি পুকুরে জমা করে বায়োরেমিডিয়েশন পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। গঙ্গার জল পরিষ্কার রাখতে কুম্ভের ওপর নজরদারি থাকছে জাতীয় গ্রিন ট্রাইবিউনাল (এনজিটি)-এর।