সামসী: বৃষ্টির শুরুতেই ফুঁসছে মহানন্দা। যেন গিলে খেতে চায় আশপাশের সমস্ত কিছু। আগ্রাসী মহানন্দাকে দেখে তাই আশঙ্কার মেঘ জমতে শুরু করেছে নদীপাড়ে। নদীভাঙন বাড়তে থাকায় লোকালয়ও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বাঁধছে। এমন পরিস্থিতিতে বোল্ডার দিয়ে মহানন্দা নদীর পাড় বাঁধানোর দাবিতে সরব হয়েছেন গ্রামের একাংশ। চাঁচল-২ নম্বর ব্লক তথা মালতীপুর বিধানসভা এলাকার চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরাতন খানপুর গ্রামে এই দাবি ক্রমশই জোরালো হচ্ছে।
বৃষ্টি জন্ম নেয় মেঘের গর্ভে। বৃষ্টি শুরু হতেই মহানন্দাকে ফুঁসতে দেখে ওঁদের মনে জন্ম নিয়েছে আশঙ্কার মেঘ। পাড় বাঁধানো না হলে এবারের বর্ষায় যে আর রক্ষে নেই, বুঝতে পারছেন গ্রামবাসীরা। তাই আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বোল্ডারের বাঁধ চাইছেন তাঁরা। পুরাতন খানপুর গ্রামের এমাদুর রহমান বললেন, ‘নেজামিয়া মাদ্রাসা থেকে পুরাতন খানপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এবং খানপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে মহানন্দা নদী পর্যন্ত পাড় বাঁধানো খুব দরকার।’ তাঁর দাবি যে যথেষ্ট যুক্তিসংগত, তা স্পষ্ট হয় নদীপাড়ে চোখ রাখলেই। খানপুর প্রাইমারি স্কুল থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত শুধুই পাড় ভাঙছে মহানন্দা। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়িঘরও ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে। পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শামসুল হক বললেন, ‘খানপুর নেজামিয়া মাদ্রাসা থেকে পুরাতন খানপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার পাড় বাঁধানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’ অন্যথায় খানপুর নেজামিয়া মাদ্রাসা, পুরাতন খানপুর প্রাইমারি স্কুল, খানপুর স্টেডিয়াম সহ শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামের মানুষ। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও রয়েছে এলাকায়। মহম্মদ মোস্তফা বলেন, ‘প্রতিবার ভোটের সময় সব রাজনৈতিক দলের তরফে মহানন্দা নদীর পাড় বাঁধানোর জন্য মৌখিক আশ্বাস মেলে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।’ এলাকাবাসীদের বক্তব্য, বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধানোর জন্য মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সীকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। লিখিতভাবে জানানো হয়েছে এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মুকেও। পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে বিডিও থেকে জেলা শাসককেও।
এপ্রসঙ্গে মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, ‘মহানন্দা নদীর পাড় বোল্ডার দিয়ে বাঁধানোর জন্য প্রস্তাব তৈরি করে রাজ্য সেচ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললেই খুব শীঘ্রই কাজ চালু হবে।’