রায়গঞ্জ: প্রাচীন মহারাজার পুজোকে ঘিরে হিন্দু-মুসলিম মিলনক্ষেত্র ইটাহারের বেলুল গ্রাম। প্রচলিত রীতি মেনে প্রতিবছর অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় মঙ্গলবার ও বুধবার ওই পুজো হয়। প্রতিবছর পুজোর ঠিক আগে মহারাজার একটি বিশেষ মূর্তি তৈরি করা হয়। পাশাপাশি তৈরি করা হয় লক্ষ্মী, হরিকণা, মাশান কালী, গ্ৰাম ঠাকুর, পাঁচ বাহিনী সহ ১২ রকমের মাটির প্রতিমা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে পুজো শুরু হবে। রাতভর পুজো চলবে। এরপর বুধবার পুজোর প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এদিন স্থানীয় বাসিন্দারা পুজোয় মেতে ওঠেন। বিগ্রহের সামনের অংশে হাতির পিঠে থাকেন মহারাজা নিজে। আর তাঁর ঠিক পিছনেই আদি শক্তি দেবীরূপে অধিষ্ঠান করেন। মূল বিগ্রহের পাশে অন্যান্য দেবদেবীরও অবস্থান রয়েছে। মহারাজা পুজোর সময় তাঁদেরও পুজোঅর্চনা করা হয়। পুজোয় কোনও বলি হয় না। মূর্তি বিসর্জন হয় ঠিক এক সপ্তাহ পর, অর্থাৎ অগ্রহায়ণ মাসের তৃতীয় বুধবার। এবারও সেই রীতি মেনে এদিন মহা ধুমধামে মহারাজা পুজোর আয়োজন করা হয়েছে বেলুল গ্রামে।
রূপাহার ছাড়াও মহাদেবপুর, বেনিয়াপুকুর, হাতিয়া, পলাইবাড়ি, ডোহল, সরাই, পিপলান, মারাইকুড়া সহ একশোটি গ্রামের বাসিন্দারা এই পুজোয় অংশ নেন। স্থানীয় ৯০ বছরের প্রবীণ বাসিন্দা ভবেন্দ্র দেবশর্মা বলেন, ‘শতাব্দি প্রাচীন এই পুজো মহারাজার পুজো। বাপ-ঠাকুরদার আমলেও এই পুজো হয়েছে। কত বছরের পুরোনো তা ঠিক আমরাও বলতে পারব না। দেবতা নাকি এই পুজো করার জন্য গ্রামবাসীকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই প্রতি বছর এই পুজো হয়ে আসছে। প্রথমে পীরের দরগায় পুজো দিয়ে এক এক করে সমস্ত প্রতিমায় পুজো দেওয়া হয়। আমাদের এই গ্রামে যাতে কোনও অপদেবতা বা ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেই কারণেই হিন্দু-মুসলিম মিলে একত্রিত হয়ে এই পুজো করে থাকি।’
সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির সদস্য কুরবান আলি বলেন, ‘পীরের দরগায় পুজো দিয়ে শুরু হয় মহারাজার পুজো। বাপ-ঠাকুরদার কাছ থেকে শুনেছি, কয়েকশো বছর আগে এই গ্রামে বন্যায় ও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। অনাহারে ভুগছিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। এই পুজো করার পর থেকে গ্রামে আজ পর্যন্ত বন্যার জল ঢুকতে পারেনি। ২০১৭ সালে বন্যায়ও আমাদের গ্রামে জল ঢোকেনি। হিন্দু-মুসলিম একত্রিত হয়ে এই পুজো করি।’
স্থানীয়দের দাবি, বেলুল গ্রামের ওপর মহারাজার আশীর্বাদ রয়েছে। বছরের পর বছর নিষ্ঠাভরে মহারাজাকে পুজো দিয়ে আসছেন অজগর আলি, কুরমান আলি, মহেন্দ্র বসাকরা। তাঁরা আরও জানান, একবার বেলুল গ্রামের বহু মানুষ কোনও এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় মহারাজার কাছে মানত করেই শেষে মুক্তি মিলেছিল। এছাড়াও এখনকার বেশিরভাগ বাসিন্দা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ধারণা মহারাজার কৃপা থাকলে ফসলের আবাদও ভালো হবে। তাই প্রতিবছর নিয়মনিষ্ঠা মেনেই পুজোয় শামিল হন তাঁরা। এদিন গ্রামে গিয়ে সর্বত্র উৎসবের মেজাজ ধরা পড়ে। মহারাজার পুজোস্থলের কাছেই রয়েছে পীরবাবার মাজার। সারাবছর হিন্দুরা যেমন মাজারে গিয়ে মানত করেন, মোমবাতি জ্বালান, ঠিক তেমনই মহারাজার পুজোয় শামিল হন মুসলমানরাও।
ফালাকাটা: মাত্র ১ মাস ১ দিনের ব্যাবধান। ফের বিপুল পরিমান ব্রাউন সুগার জাতীয় নিষিদ্ধ মাদক…
চ্যাংরাবান্ধা : মেধাতালিকায় তার স্থান হয়নি চ্যাংরাবান্ধা (Changrabandha) গ্রাম পঞ্চায়েতের চৌরঙ্গী এলাকার বাসিন্দা দীপজয় সরকারের।…
নাগরাকাটা: মাধ্যমিকে (Madhyamik Result 2024) সামগ্রিক ভালো ফলের নিরিখে ফের জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) অন্যান্য স্কুলগুলিকে টেক্কা…
চাঁচল: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে মালদার (Malda) চাঁচল ১ (Chanchal)…
সিতাই: চোখে স্বপ্ন বড় হওয়ার। তাই আর্থিক অনটন বাধা হতে পারেনি কোচবিহার জেলার সিতাই (Sitai)…
গয়েরকাটা: মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল (Madhyamik Result 2024) করল বানারহাট (Banarhat) ব্লকের শ্রাবনীতা মল্লিক। দুরামারি চন্দ্রকান্ত…
This website uses cookies.