অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ির (Mainaguri) সাবেকি পুজোগুলিও (Durga Puja) ধীরে ধীরে থিম পুজোর দিকে ঝুঁকছে। শহরের সাবেকি পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ফুটবল ময়দান দুর্গাবাড়ি, ময়নামাতা কালীবাড়ি ও পশ্চিমপাড়া দুর্গাবাড়ির পুজো। নিষ্ঠাকে সম্বল করে হওয়া পুজো হিসেবে এগুলোর সুনাম যথেষ্ট।
কিন্তু বর্তমানের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে গত বছর থেকে মণ্ডপে সাবেকি পুজোর পাশাপাশি থিমনির্ভর মণ্ডপ তৈরি করা শুরু করেছে পশ্চিমপাড়া দুর্গাবাড়ি। এবছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তাদের এবছরের থিম ‘দেখো নয়ন ভরে’। ইতিমধ্যেই ফালাকাটার শিল্পী স্নেহাংশুশেখর বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ওই থিম ফুটিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। চিত্রশিল্পী সজল পাল ও তাঁর সহযোগীরা ব্যস্ত মণ্ডপজুড়ে বিশেষ ঘরানার বিভিন্ন ছবি আঁকতে। রকমারি চিত্রকলার মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের জনপ্রিয় স্থান, বিভিন্ন জনজাতির কৃষ্টি-সংস্কৃতি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
থিমের পাশাপাশি অবশ্য পশ্চিমপাড়া দুর্গাবাড়ির স্থায়ী নাটমন্দিরেও সাবেকি পুজোর আয়োজন করা হয়। ইতিমধ্যে সেখানেও মৃৎশিল্পী নির্মল পাল সাবেকি ঘরানার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এই পুজো কমিটির সদস্য শুভজিৎ বসু, অভিজিৎ রায়, পিন্টু দে’র কথায়, সাবেকিয়ানা ও থিম এই দুইয়ের মেলবন্ধনে জমজমাট আমাদের শারদ আবহ।
এছাড়াও পুজোর কয়েকদিন অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে দেশ–বিদেশের জনপ্রিয় খাবারের সম্ভার নিয়ে থাকছে ‘ফুড কর্নার’-এর ব্যবস্থাও। উদ্যোক্তা দীপম গুহ, শঙ্খজিৎ বসু জানান, দর্শনার্থীদের মন জয় করতে ব্যবস্থাপনায় তাঁরা কোনও ত্রুটি রাখতে চান না৷
অন্যদিকে, শহরের সব থেকে পুরোনো পুজো ফুটবল ময়দান দুর্গাবাড়ির। এখানকার পুজোতে এখনও অটুট সাবেকিয়ানা। এবারের পুজোর জন্য মন্দিরে প্রায় ১১ ফুট উচ্চতার প্রতিমা তৈরি করছেন মৃৎশিল্পী বিকাশ রায়। জোরকদমে পুজোর প্রস্তুত চলছে বলে পুজো কমিটির সম্পাদক ঝুলন দে ও শৈলেন রায় জানিয়েছেন।
ময়নামাতা কালীবাড়ির পুজোয় গত বছর থেকে কুমারীপুজো শুরু হয়েছে। এবছরও তা এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে৷ পাঁচ বছর আগে এই পুজো কমিটি বলিপ্রথা বন্ধ করেছে। কালী মন্দিরের দুর্গাদালানে মৃৎশিল্পী বুলেট রায় ইতিমধ্যেই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক বিমান রায় চৌধুরী জানান, গোটা পুজোর পাশাপাশি দশমীর দিন অপরাজিতাপুজো এখানকার অন্যতম আকর্ষণ।