মালবাজার: যত দিন গড়াচ্ছে ততই মাল পুরসভার (Mal Municipality) অচলাবস্থা আরও জটিল থেকে জটিলতার হচ্ছে। এবার স্বেচ্ছায় নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার কথা জানালেন মাল পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান (Vice Chairman) উৎপল ভাদুড়ি। তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দলের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলার। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাল পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, যা ইতিমধ্যেই বাতিল করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান।
আগেই দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে পুরপ্রধান স্বপন সাহাকে। তারপর থেকে পুরসভার সমস্ত দায়িত্ব পরিচালনা করছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ি। যতদিন স্বপন সাহা ছুটি নিয়ে পুরসভায় অনুপস্থিত ছিলেন, ততদিন পুরসভার কাজকর্ম পরিচালনায় সমস্যা হয়নি পুর আধিকারিকদের, এমনটাই দাবি উৎপল ভাদুড়িদের। নভেম্বর মাসে স্বপন সাহা পুরসভায় স্বপদে যোগ দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এই পরিস্থিতিতেও দলীয় নির্দেশে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ি। বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতির কথা ঘোষণা করেন তিনি। লিখিতভাবে বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে জানিয়েছেন তিনি।
চেয়ারম্যান স্বপন সাহাকে দল থেকে সাসপেন্ড করার পর থেকে অচলাবস্থার সূত্রপাত মাল পুরসভায়। প্রায় দেড় মাস ছুটি কাটানোর পর নভেম্বর মাসে পুরসভায় নিজের কাজে যোগ দেন স্বপন সাহা। তারপরই পদে পদে বিভ্রান্ত হতে হচ্ছে পুরকর্মীদের। দলের নির্দেশ অনুযায়ী ভাইস চেয়ারম্যান পুরসভার কাজকর্ম দেখভাল করছিলেন। দলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ নিজের বাসভবনে বিশেষ বৈঠক ডেকে মালের সকল কাউন্সিলারদের নির্দেশ দিয়েছেন, উৎপল ভাদুড়িকে সহযোগিতা করতে। তবে উৎপল ভাদুড়ির অভিযোগ, দলের সেই নির্দেশকে অমান্য করে দল থেকে সাসপেন্ডেড স্বপন সাহার সুরে কথা বলছে তার গোষ্ঠীর কাউন্সিলাররা। এমনকি দলের টাউন সভাপতি অমিত দে চেষ্টা করছেন স্বপন সাহাকে দলে ফিরিয়ে আনতে। একটি পুরসভায় দুজন চেয়ারম্যান কিভাবে থাকতে পারে? উৎপল ভাদুড়ির এই বক্তব্যে সহমত জানিয়েছেন কাউন্সিলার পুলিন গোলদার। তাঁর বক্তব্য, দল কাকে পুরসভা চালানোর দায়িত্ব দেবে সেটা দল সিদ্ধান্ত নেবে, তবে সেই সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। জল এখন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন স্বপন সাহা ও তার ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলাররা। শীঘ্রই লিখিতভাবে বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, পুরসভায় গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ অডিট। আগামীকাল এক মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার কথা অস্থায়ী কর্মী এবং শ্রমিকদের। সেটা সম্ভবত পুরসভা মিটিয়ে দিলেও প্রশ্ন উঠছে ২৫ জানুয়ারির বেতন নিয়ে। এমনিতেই বিভিন্ন অভিযোগ এবং মামলায় জর্জরিত মাল পুরসভা, তার মধ্যে চেয়ারম্যান বনাম ভাইস চেয়ারম্যানের এই ঠান্ডা লড়াই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিরল ঘটনা বলে মনে করছে পুরসভার একাংশ।