শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: বামনডাঙ্গা ও কলাবাড়ি চা বাগানের পর এবার নাগরাকাটার (Nagrakata) আরও কয়েকটি এলাকা থেকে বিক্ষিপ্তভাবে পিভি ম্যালেরিয়া (Malaria) রোগীর সন্ধান মিলল। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য দপ্তরের। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ মোল্লা ইরফান হোসেন বলেন, ‘যেখান থেকে আক্রান্তের সন্ধান মিলছে, সেখানে নিয়মিত সমীক্ষা চলছে। নতুন করে কোনও রোগী চিহ্নিত হলে দ্রুত তাঁকে সরকারি চিকিৎসার আওতায় আনা হচ্ছে।’
নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, ‘বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগের। স্বাস্থ্য নিয়ে গঠিত ব্লক স্তরের টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে সবকিছু বিশদে আলোচনা হচ্ছে। বৃষ্টি একটু কমলেই মশা দমনের জন্য রাসায়নিক তেল স্প্রে করার কর্মসূচি পরিকল্পনায় রয়েছে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষের দিকে ব্যাপক হারে ম্যালেরিয়া ছড়ায় বামনডাঙ্গা চা বাগানে। আদাজল খেয়ে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর চলতি বছর ওই রোগটি ছড়াতে শুরু করে কলাবাড়ি চা বাগানে। শুধু কলাবাড়ি থেকেই ১৭০ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এরপর ম্যালেরিয়া আক্রান্তের খোঁজ মিলতে শুরু করে ওই বাগানের ঠিক উলটো দিকে অবস্থিত খেরকাটা বস্তি থেকে। কলাবাড়ি ও খেরকাটাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ডায়না নদী। দিনকয়েক আগেও নদীতে জল কম থাকায় দুটি এলাকার বাসিন্দাদেরই নদী ডিঙিয়ে অবাধ যাতায়াত ছিল। ফলে কলাবাড়ি থেকেই খেরকাটায় ম্যালেরিয়ার প্রবেশ বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের ধারণা।
একই কারণ কাজ করেছে বামনডাঙ্গা ও কলাবাড়ির মধ্যেও। খেরকাটায় এখনও পর্যন্ত ১৫ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। অন্যদিকে লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্যারন ও গ্রাসমোড় চা বাগান, আংরাভাসা দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুমপাড়া, সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সার্কাস লাইনের মতো জায়গাগুলি থেকেও কয়েকজন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের হদিস মিলেছে। সংখ্যাটি অবশ্য খুব বেশি নয়। গ্রাসমোড় চা বাগানের চার নম্বর লাইন থেকে সম্প্রতি একজনের ম্যালেরিয়া পজিটিভ ধরা পড়ে। তারপর প্রায় গোটা বাগানজুড়েই স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সমীক্ষা ও বাসিন্দাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। তবে নতুন করে কোনও আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানাচ্ছে, এর আগে বামনডাঙ্গা বা কলাবাড়িতে মশা মারতে প্রতি বাড়িতে ইন্ডোর রেসিডুয়াল স্প্রে করা হয়। এজন্য এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিকের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি মেলার পরই ওই স্প্রে করা সম্ভব।