জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: ভবানী মোড়ের বাবলা সরকারের অফিস ঘরের চেয়ার শূন্য। সেই শূন্য চেয়ারের পাশের চেয়ারে বসে রয়েছে তাঁর কুকুর। মনিবের চেয়ারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। চোখ থেকে মাঝেমধ্যেই ঝরে পড়ছে জল। মনিবের অনুপস্থিতি মেনে নিতে পারছে না কুকুরছানা। ছেড়েছে খাওয়াদাওয়া। দুদিনে একটা বিস্কুট গিয়েছে পেটে। সুযোগ পেলেই ছুটে এসে কাউন্সিলার অফিসের চেয়ারে বসে ফ্যালফ্যাল করে তাকাচ্ছে মনিবের চেয়ারের দিকে। মাঝেমধ্যে কাঁদছে সে। বাবলা সরকারের অকাল প্রয়াণে পরিবারের সকলের সঙ্গে ভেঙে পড়েছে তাঁর পোষ্য কুকুরটিও।
বাবলা সরকার কুকুর ভালোবাসতেন। তাঁর দুটি বাড়িতে পোষ্য কুকুরের সংখ্যা ৫টি। বছরখানেক আগেই পাগ প্রজাতির বিদেশি কুকুরছানা এনেছিলেন তিনি। নিজের ছেলের মতোই এই কুকুরকেও অত্যন্ত স্নেহ করতেন তিনি। সুকান্তপল্লির বাড়িতে নিজের কাছে সবসময় রাখতেন। মাঝেমধ্যে কানির মোড় অফিসেও দুলাল সরকার নিয়ে আসতেন তাকে। দুজনের বন্ডিং এতটায় ছিল যে মনিবের আওয়াজ না শোনা পর্যন্ত খাওয়াদাওয়াও করত না। শনিবার বিকেলে সুকান্তপল্লির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল কাউন্সিলার অফিসের সামনে ভিড়। শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ছুটে আসছেন দলে দলে।
পার্টি অফিসেরই একজন বলে উঠলেন ‘দাদা দুদিন ধরে কুকুরটি কিছু খায়নি। অনেক কষ্ট করে দুটো বিস্কুট খেয়েছে মাত্র। শূন্য চেয়ারের দিকে সবসময় তাকিয়ে থাকছে। গতকাল যখন বাবলাদার মরদেহ এখানে আনা হয়েছিল তখন থেকেই মানুষের মতো কাঁদছে সে। বাবলাদা নিজের ছেলের মতো এই কুকুরকে ভালোবাসতেন। বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটি কোলে উঠত। বাবলাদার বিছানা থেকে অফিস ঘর সবসময় সঙ্গে থাকত। দুদিন ধরে বাবলাদা আর ব্যাটা বলে ডাকেনি। তাই খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছে।’