আজাদ, মানিকচক: ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির (Bhutni Flood Situation) ক্রমশ অবনতি, সোমবার দুপুরে গঙ্গা নদীর জলস্তর আবারও বেড়েছে প্রায় ছয় সেন্টিমিটার, যার জেরে জলস্তর ২৫.২০ মিটার দাঁড়িয়েছে। জারি করা রয়েছে হলুদ সতর্কতা। এই পরিস্থিতিতে বন্যার জলে জলমগ্ন এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গায় স্থানান্তর করতে তৎপর জেলা প্রশাসন।
সোমবার সাতসকালে মালদার (Malda) মানিকচকে (Manikchak) যান জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া, মহকুমা শাসক পঙ্কজ তামাং সহ বিডিও, আইসি, বিএমওএইচ প্রমুখ। পরিদর্শন করেন মথুরাপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ফাঁকা ময়দান। ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তড়িঘড়ি ভূতনির জলমগ্ন এলাকায় থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গায় স্থানান্তরের।
ভূতনির বন্যা পরিস্থিতির কারণে জলমগ্ন তিনটি অঞ্চল, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত। জলবন্দি প্রায় ৭-৮ হাজার পরিবার। বিগত দু-সপ্তাহ ধরে এলাকায় জল স্থায়ী হওয়ার কারণে জমা জল থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। তারমধ্যেই সেই দুর্গন্ধযুক্ত জলের মধ্যে দিয়ে চলছে যাতায়াত। বাড়ছে ডেঙ্গি ও চর্মরোগের শঙ্কাও। যাতায়াতের মধ্যে একমাত্র নৌকা, সেই যাতায়াতও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। নৌকায় অনেকসময় অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। অন্যদিকে পুলিনটোলায় বিদ্যুতের তার জলে ডুবে যাওয়ায় বিগত পাঁচদিন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই উত্তর চণ্ডীপুরে, ফলে আরও নাজেহাল অবস্থা। বানভাসি সফিকুল ইসলাম জানালেন, বাড়ি বাড়ি জল, পচা জলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কোনও ধরনের ব্লিচিং পাউডার বা কোনও কিছু প্রয়োগ করা হচ্ছে না। গতকাল গরমে প্রায় সাতজন অসুস্থ হয়েছে চাকপাড়া, আইয়ুবটোলা ও হাজি সমিরুদ্দিনটোলায়। প্রশাসন খুব দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে কী হবে তা নিয়ে শঙ্কায় দুর্গতরা।
এদিন, মানিকচকের মথুরাপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ফাঁকা ময়দানগুলি পরিদর্শন করেন জেলা শাসক। কথা বলেন মানিকচকের বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সঙ্গে। বিডিওকে নির্দেশ দেওয়া হয় মাইকিং করে দুর্গতদের সুরক্ষিত জায়গায় আসার জন্য। পাশাপাশি ব্লক স্বাস্থ্য অধিকারিককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এবিষয়ে পঞ্চায়েত সভাপতি পিংকি মণ্ডলের কথায়, ‘ভূতনির বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পাটনায় প্রবল বৃষ্টির কারণে গঙ্গার জল আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। তাই বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে পারে, তাই তাদের উদ্ধার করে এই ত্রাণ কেন্দ্রগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’