মোজাম্মেল হক, রতুয়া: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ভাইকে পরিবারসহ ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠল দাদা ও বৌদির বিরুদ্ধে। গত পাঁচ মাস ধরে ভাড়াবাড়ি কিংবা বাইরে কাটাতে হচ্ছে প্রীতম মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী-দুই সন্তানকে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার (Malda) রতুয়ার (Ratua) পুখুরিয়ায়। যদিও পালটা অভিযোগ এনেছেন দাদা অচিন্ত্য মণ্ডলও।
পুখুরিয়া থানার মহারাজপুরের খৈলসাহান্না গ্রামের বাসিন্দা অচিন্ত্য মণ্ডল এবং প্রীতম মণ্ডল। তাঁরা বাবার তিন শতক জায়গাতে বসবাস করছিলেন। এই তিন শতক জায়গার মধ্যে দেড় শতকে ওঁদের বাড়ি রয়েছে, এবং বাকি দেড় শতক ফাঁকা জায়গা। প্রীতমবাবুর অভিযোগ, ‘আমরা দুই ভাই এবং দুই বোন। বাবা মারা যাওয়ার পরে আমি দুই বোনের কাছ থেকে তাঁদের অংশটুকু কিনে নিই। ফলে দেড় শতক বাড়ির মধ্যে বেশিরভাগটাই আমার নামে রেকর্ড আছে। কিন্তু দাদা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ছেলেমেয়ে এবং বৌ নিয়ে আমি খুব কষ্টে আছি। পুখুরিয়া থানায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু পুলিশ উদাসীন। আমি ভয়ে গ্রামে ঢুকতে পারছি না।’
তাঁর স্ত্রী কবিতা মণ্ডলের দাবি, ‘আমার ভাসুর এবং তার স্ত্রী আমাদেরকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। নাবালক দুই সন্তানকে নিয়ে পথে-ঘাটে দিন কাটাতে হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন আমাদের কথা শুনছে না। আমরা কী করব বুঝতে পারছি না।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দাদা অচিন্ত্য মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি আমার ভাই বা তার বউকে বাড়ি থেকে তাড়াইনি। দেড় শতক জমি স্ত্রী পিংকি মণ্ডলের নামে রয়েছে। প্রীতম বেশ কয়েকবার নানা অজুহাতে আমার থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি বাবার কাছ থেকেও বেশিরভাগ সম্পত্তি নিজের নামে করে নিয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার পরে আমি এবিষয়গুলো জানতে পারি। আমি আমার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে সে কোনওভাবে দিতে রাজি হয়নি। এনিয়ে একাধিকবার সালিশি সভাও বসে। সেখানে সে টাকা ফেরত দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর নিজের ইচ্ছেয় বাড়ি থেকে চলে যায়।’
সালিশির কথা স্বীকার করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের প্রতিনিধি আব্দুস সামাদ। তিনি জানান, দুই ভাইয়ের বিবাদ নিয়ে আমরা একাধিকবার সালিশি সভা করেছি। সেখানে আমরা জানতে পারি, প্রীতম দাদা অচিন্ত্য মণ্ডলের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আমরা সেই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললে প্রীতম মণ্ডল কোনওভাবেই রাজি হয়নি। সে সালিশি সভায় সবার সামনে বাড়ি ছাড়ার মুচলেকা দিয়েছিল। তাই এখানে অচিন্ত্যবাবুর নিজের ভাইকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না।’