প্রকাশ মিশ্র, মানিকচক: রবিবার। বাঁধ ভাঙার পর ভোর থেকেই হু হু করে জল ঢুকেছে মালদার (Malda) ভূতনির হিরানন্দপুর অঞ্চলে। সারাদিন বন্যার জল পেরিয়ে পরিবার নিয়ে দূরে অস্থায়ী আশ্রয়ের খোঁজে ক্লান্ত বিধ্বস্ত বানভাসি বীরবল মাহাতো। সারাদিন পরিবারের কারও পেটে দানা পড়েনি। ঠাঁই নিয়েছিল পশ্চিম রতনপুর বাঁধের উপরে। বন্যার ভয়ে পালিয়েও রক্ষে নেই, সেখানে আবার রাতেই শুরু হয় ভাঙনের তাণ্ডব। বাধ্য হয়ে আবার স্থানবদল। এবার আশ্রয় কেশরপুর কলোনি বাঁধে। সেখানেও চলছে জায়গা দখলের লড়াই। সন্ধ্যা জড়িয়ে আসছে। আদপে এখানেও ঠাঁই পাবে কি না এখনও জানা নেই বানভাসি বীরবলের পরিবারের।
সোমবার আরও জল বেড়েছে। ভাঙন ও বন্যার জোড়া ফলায় কার্যত জেরবার বীরবলের মতো হাজার খানেক পরিবার। দানাপানি, জামাকাপড়ও ঘর থেকে বের করার সময় মেলেনি। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা। জল পেরিয়ে খাবার ও আশ্রয়ের খোঁজে ক্লান্ত বিধ্বস্ত। তাঁদের মুখে একটাই কথা, শুখা মরসুম থেকেই আমরা রিং বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। দুর্গত ভূতনিবাসীর কথা প্রশাসন কানেই তুললো না। আজ যখন ভূতনি ভেসে গেল, তার একদিন আগে বাঁধ নির্মাণের কথা মনে পড়েছে। ওদের কি ? আমরাই তো শেষ হয়ে গেলাম!
কথায় কথায় বীরবল জানালেন, রবিবার সকালে যখন জল ঢুকতে শুরু হল তখন বাইকে করে বৃদ্ধা মা, বৌমা, ছেলেদের নিয়ে কোনও একটা নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে রাখার জন্য ছুটলাম। জামাকাপড় কিছু নেওয়ার সময় পাইনি। দানাপানিও সব পড়ে রইল। কাগজপত্র টাকাপয়সা যা ছিল, সব পড়ে রইল। পশ্চিম রতনপুর বাঁধে আশ্রয় মিলেছিল। বাদ সাধল কোশীর শাখা নদী। রাতে শুরু হল ভাঙন। আতঙ্কে সোমবার সকালে রতনপুর বাঁধ ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছি কেশরপুর কলোনি বাঁধে। এখানে আগে থেকে যাঁরা ঠাঁই নিয়েছেন, তাঁরা নতুনদের জায়গা দিচ্ছেন না। শেষপর্যন্ত এখানেও থাকা হবে কি না তা জানি না।