তনয়কুমার মিশ্র, মোথাবাড়ি: ঝাড়খণ্ডের থেকে চরের জমি পুনরুদ্ধারে রাজ্য সরকার এক বছর আগে উদ্যোগ নিলেও সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। গঙ্গা নদীর একাধিক মৌজায় সার্ভে ও জমি জরিপের কাজ শুরু হল না এক বছরেও। স্বভাবতই আশাহত গঙ্গাপাড়ের লক্ষাধিক মানুষ! এনিয়ে জেলা প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে।
এক বছর আগে পাঁচ ব্লকের আধিকারিক ও চরবাসীদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয় জেলা শাসকের দপ্তরে (Malda)। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় শীঘ্রই গঙ্গার মাঝে জেগে ওঠা একাধিক মৌজায় সীমানা নির্ধারণ ও সার্ভের কাজ শুরু করা হবে। তৎকালীন জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছিলেন, প্রথমে কালিয়াচক ২ ব্লকের সমস্ত মৌজায় এই সার্ভে ও সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে জেলার বিভিন্ন ব্লকে এই কাজ শুরু হবে। চরবাসীরা বাংলাভুক্তির দাবিতে গঙ্গা ভাঙন নাগরিক অ্যাকশন প্রতিরোধ কমিটির নেতৃত্বে গঙ্গার চরে একটি কমিটি গড়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জেলা শাসক গোটা বিষয়টিকে মুখ্যমন্ত্রীকে জানায়। মুখ্যমন্ত্রী চরের বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করার জন্য মুখ্যসচিবকে জানান। এরপর মুখ্যসচিব জেলা শাসককে নির্দেশ দিলে প্রশাসন এই কাজে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এক বছর অতিক্রম করলেও জেলা প্রশাসন উদাসীন। জমি জরিপের কাজ একদম এগোয়নি। এবিষয়ে গঙ্গাপাড়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
পলাশগাছি চরের বাসিন্দা ইরফান শেখ জানিয়েছেন, ‘আমরা বাংলার বাসিন্দা ছিলাম। কিন্তু আমাদের চরে ঝাড়খণ্ডের প্রশাসন কায়েম আছে। আমরা চাই, জমি জরিপের কাজ প্রশাসন শুরু করুক।’
এদিকে জন আন্দোলন ও গঙ্গা ভাঙন নাগরিক অ্যাকশন কমিটির তরফে বুধবার এবিষয়ে কেন জমি জরিপের কাজ এগোচ্ছে না, সেবিষয়ে জেলা শাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়। গঙ্গা ভাঙন নাগরিক অ্যাকশন প্রতিরোধ কমিটির কর্ণধার তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি নিয়ে জেলা শাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। জমি জরিপের জন্য জেলা প্রশাসন প্রায় কুড়ি কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখান থেকে অনুমোদন পেলেই এই কাজটি শুরু হবে জানিয়েছেন।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জমি জরিপের জন্য প্রশাসন প্রায় কুড়ি কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আর্থিক অনুমোদন পেলেই জমি জরিপের কাজটি শুরু হবে।