সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (US) পাড়ি দিল হরিশ্চন্দ্রপুরের (Harishchandrapur) মাখনা (Makhana)। মালদা (Malda) জেলার অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসাবে চিহ্নিত মাখনাকে মার্কিন মুলুকে পাঠালেন হরিশ্চন্দ্রপুরের তরুণ ব্যবসায়ী তনুজ জৈন। শনিবার দক্ষিণ ভারতের একটি বন্দর থেকে জাহাজে হরিশ্চন্দ্রপুরে উৎপাদিত ৩০০ কিলো মাখনা আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে এই ৩০০ কেজি মাখনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের শপিং মলগুলিতে বিক্রি হবে। ভারতবর্ষের এই পুষ্টিকর খাদ্য মার্কিন নাগরিকদের যাতে রসনাতৃপ্তি করতে পারে, তার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমেরিকায় মাখনার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলে ভারতে এই চাষের অর্থনৈতিক চিত্র সম্পূর্ণ বদলে দেবে বলে অভিমত জেলার ব্যবসায়ী মহলের।
তনুজবাবু বলেন, ‘হরিশ্চন্দ্রপুরে আমরাই প্রথম সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাখনা উৎপাদন থেকে শুরু করে তা থেকে খই প্রস্তুতকরণ এবং প্যাকেজিং করছি। এক এক্সপোর্টিং কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা এই এক্সপোর্ট কোয়ালিটির মাখনা আমেরিকায় রপ্তানি করছি। বলতে গেলে হরিশ্চন্দ্রপুরের মাখনা এবারই প্রথম সরাসরি এভাবে জলপথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। আমেরিকায় এর জনপ্রিয়তা বাড়লে আমরা অন্যান্য দেশেও সরাসরি সরবরাহ করব। মাখনার খই দেশের বাইরে জনপ্রিয়তা লাভ করলে হরিশ্চন্দ্রপুরের আর্থিক ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে যাবে।’
জেলা উদ্যান পালন দপ্তর সূত্রে খবর, উত্তর মালদার ছ’টি ব্লকে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে মাখনা চাষ করা হয়। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ও ২ নম্বর ব্লক এলাকায় যথাক্রমে ৮০০ হেক্টর এবং প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে মাখনা চাষ করেন চাষিরা।
হরিশ্চন্দ্রপুর মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাবলু রজক বলেন, ‘এটা খুব খুশির খবর যে হরিশ্চন্দ্রপুরের মাখনা এবার বিদেশে যাচ্ছে। আমরা আশাবাদী, এবার হয়তো কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মাখনাচাষি এবং ব্যবসায়ীদের দিকে মুখ তুলে তাকাবে।
একটা সময় বারোদুয়ারির প্রখ্যাত ব্যবসায়ী পুরুষোত্তম ভগতের হাত ধরে হরিশ্চন্দ্রপুরে মাখনা চাষের প্রসার ঘটেছিল। তিনি এই চাষের পেটেন্টও করিয়েছিলেন। বর্তমানে অবশ্য উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় এই চাষ করা হচ্ছে।