জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: মানব পাচার (Human Trafficking)। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত। এক্ষেত্রে পাচারকারীদের সফট টার্গেটে থাকে নারী ও শিশু-কিশোররা। দক্ষিণী কিংবা বলিউডি সিনেমা অথবা টিভি সিরিয়ালে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার মতো ফাঁদ পেতেই রেখেছে পাচারকারীরা। ফ্যান্টাসির জগতে থাকা কমবয়সি ছেলেমেয়েরাও ওই ফাঁদে পা দিচ্ছে। অভিভাবকদের না জানিয়ে পাচারকারীদের সঙ্গে পাড়ি দিচ্ছে মুম্বই কিংবা দক্ষিণের কোনও রাজ্যে। কেউ কেউ রেল পুলিশের নজরে পড়ে যাওয়ায় বেঁচে যাচ্ছে বটে, তবে অনেকেরই আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এই অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে পূর্ব রেলের মালদা (Malda News) ডিভিশনে। রেলের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেকথা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, গত এক মাসেই মালদা ডিভিশনে ছ’টি মানব পাচারের ঘটনা ঘটেছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৩০ জন ছেলেমেয়েকে। ১০ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট এবং শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে মানব পাচারের ঘটনা বেড়েছে। ধৃত পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তাদের টার্গেট অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়েরা। আরপিএফের দল তদন্তে জানতে পেরেছে, কমবয়সি ছেলেমেয়েরা নিজেদের পরিচয় গোপন করে ট্রেনে একা একা ভ্রমণ করছে। আরপিএফ তাদের জেরা করলে তারা জানাচ্ছে, কেউ ক্যাটারিং, কেউবা বিউটি পার্লারের কাজে মামা কিংবা মাসির সঙ্গে মুম্বই যাচ্ছে। দেখা গিয়েছে, মূলত অভিনয়ের প্রলোভন দিয়েই এসব ছেলেমেয়েদের পাচার করা হয়। রঙিন দুনিয়ার টান উপেক্ষা করতে না পেরে তারাও পাচারকারীদের হাত ধরে ঘর ছাড়ে।
রেলের মালদা ডিভিশনের ম্যানেজার মণীশকুমার গুপ্তা জানাচ্ছেন, ‘মানব পাচার রুখতে রেল পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে। প্রতিটি স্টেশন তো বটেই, নজরদারি চলে ট্রেনেও। তল্লাশিতে স্নিফার ডগ ব্যবহার করা হয়। সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নাবালকদের একা ট্রেনে দেখতে পেলেই তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। রেল পুলিশকর্মীরাও এক্ষেত্রে তৎপর। মানব পাচারকারীদের কথা ভেবে সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়।’