জসিমুদ্দিন আহম্মদ, মালদা: পৈতৃক সম্পত্তি বেচতে চান না বৃদ্ধ। তাই তাঁর জমি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিতে তাঁকে অপহরণ করল দুষ্কৃতীরা। দলিলে সই করাতে রাতভর নির্মম শারীরিক অত্যাচার এমনকি বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই মর্মান্তিক ও ঘৃণ্য ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার (Malda News) ইংরেজবাজারের (English Bazar) কোতুয়ালি অঞ্চলের চৌধুরী পাড়ায়। আক্রান্ত ওই বৃদ্ধের নাম কালীপদ মাঝি (৬৫)। সোমবার বেলা ১টায় দুষ্কৃতীদের ডেরা থেকে কোনওক্রমে ওই বৃদ্ধ পালিয়ে আসলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিকেলে (Malda Medical College And Hospital) ভর্তি করা হয়। ঘটনায় কোতুয়ালির টিপাজানি এলাকার দুই দুষ্কৃতীর নামে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বৃদ্ধ। যদিও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।
৫ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন কালীপদবাবু। বর্তমানে স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার। তিনি জমি জায়গা বেচাকেনার কাজের সঙ্গে যুক্ত। কালীপদবাবুর মেয়ে, বুলি মাঝি সরকার এদিন জানান, ‘বাবাকে টিপাজানির অমিত হালদার ফোন করে বলেন একটা জমি দেখতে যাবেন। অটোতে করে কাটরাবন্নায় আসতে বলেন। বাবা ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন। তারপর আর বাড়ি ফিরেননি। ফোন অফ ছিল। সারারাত বাড়ি ফিরে না আসলে মা আমাদের ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানান। আমরা সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করেছি। অমিত হালদারকে ফোন করেও পাইনি। নিরুপায় হয়ে বেলা ১২টায় ইংরেজবাজার থানায় মিসিং ডায়ারি করি। দুপুর ১টা নাগাদ বাবা বাড়ি ফিরে আসলে আমরা দেখতে পাই সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। বাবার কাছ থেকে জানতে পারি তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমরা অমিত হালদার ও কুণাল দাসের নামে অপহরণের অভিযোগ জানিয়েছি ইংরেজবাজার থানায়।’
কালীপদ মাঝির বক্তব্য, অমিত ও আরও পাঁচজন লোক বন্দুক নিয়ে সারা রাত স্থান পরিবর্তন করে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে নামায় আমাকে। সেখানে আমাকে মারতে শুরু করে। তারা জানায় দলিলে সই না করা পর্যন্ত ছাড়বে না। এইভাবে গোটা রাত উৎপীড়ন করে আজ দুপুরে তাঁরা চলে যায়। আমাকে পাহারা দেওয়ার জন্য একজনকে রেখে যায়। ওই লোকটি ঘুমিয়ে পড়লে আমি পালিয়ে মূল সড়কে উঠি। অটোতে চেপে প্রথমে মিলকি পৌঁছাই। সেখানে স্থানীয় মানুষদের গোটা ঘটনা খুলে বললে তাঁরা বাসে চাপিয়ে মালদায় পাঠিয়ে দেন। এইভাবে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি আমি।’