সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: ঝাড়খণ্ড দিয়ে উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছে নিম্নচাপ অক্ষরেখা। তারই জেরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে মালদায় (Malda)। কয়েকদিন আগে পাহাড়ের বৃষ্টিপাতের জেরে ফুলহর নদীর (Fulahar River) জলস্তর ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুরের (Harishchandrapur) ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীর দক্ষিণ তীরবর্তী অসংরক্ষিত এলাকার গ্রামগুলিতে। অসম্ভব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল রশিদপুর, কাউয়াডোল, মিরপাড়া, তাঁতিপাড়া সহ একাধিক গ্রাম। পরবর্তী সময়ে উত্তরে বৃষ্টিপাত কমলে ভাঙনের প্রকোপও কমতে শুরু করে। শুক্রবার থেকে নিম্নচাপের জেরে জেলায় ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ভাঙন (River Erosion) নিয়ে অশনি দেখছেন নদী তীরবর্তী গ্রামের মানুষজন।
এদিকে ভাঙনের প্রকোপ কমতেই ইসলামপুর অঞ্চলের রশিদপুর গ্রামের বাসিন্দারা স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের আশ্রয় থেকে একে একে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছিলেন। স্কুলটি এখন পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এ’মাসেই পরীক্ষা। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হতেই আবার নদীর জল বাড়ার আশঙ্কায় স্থানীয়রা। প্রধান শিক্ষক চন্দ্রশেখর সাহা জানালেন, ‘আপাতত ভাঙন দুর্গতরা স্কুল থেকে চলে গিয়েছেন। দুটি পরিবার এখনও রয়েছে। তাঁদের একদমই ভিটেমাটি নেই। স্কুলের কাজকর্ম চলছে। কিন্তু যে হারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে আবার জল বাড়বে।
সবাই চলে গেলেও এখনও রশিদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পরিবার নিয়ে রয়েছেন শেখ বালকা। তাঁর বাড়িঘর, জমি সবই নদীর তলায়। তিনি বলেন, ‘আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তাই পরিবার, সংসার নিয়ে স্কুলেই পড়ে আছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলম বলছেন, ‘আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জল বাড়ার সঙ্গে এবার এলাকাতেও জল জমতে শুরু করেছে। রশিদপুরের পূর্বপাড়ার ১১০টি পরিবার চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। এবার বর্ষায় কী হবে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।’
যদিও জেলা সেচ দপ্তরের বক্তব্য, নদীর দক্ষিণ পাড় অসংরক্ষিত এলাকা। নদীর প্রাকৃতিক নিয়মে সেখানে ভাঙন হবেই। হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের বিডিও তাপস পাল জানিয়েছেন, ‘আমরা সবরকম পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। জল না কমলে ভাঙন রোধ করার স্থায়ী কোনও সমাধান এখনই সম্ভব নয়।’