নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের সমর্থন আদায়ে এবার পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মডেলকেই হাতিয়ার করছে রাজনৈতিক দলগুলি। একদিকে আম আদমি পার্টির ২১০০ টাকার ‘মহিলা সম্মান যোজনা’, অন্যদিকে কংগ্রেসের ২৫০০ টাকার ‘পেয়ারি দিদি যোজনা’। মহিলা ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দুই প্রধান প্রতিপক্ষের এই টানাপোড়েন দিল্লি দখলের রাজনৈতিক লড়াইকে আরও জমজমাট করে তুলেছে। মমতার দেখানো পথ ধরেই মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড সহ একাধিক রাজ্যে মহিলাদের জন্য ভাতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাতে সাফল্যও মিলেছে।
সোমবার কংগ্রেস তাদের প্রথম প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে। ‘পেয়ারি দিদি যোজনা’-র অধীনে মহিলাদের প্রতি মাসে ২৫০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন দলটির তরফে। নয়াদিল্লির দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার, রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি দেবেন্দ্র যাদব, জাতীয় মহিলা কংগ্রেস সভাপতি অলকা লাম্বা, রাজ্য মহিলা কংগ্রেস সভাপতি পুষ্পা সিং এবং জাতীয় মুখপাত্র রাগিণী নায়েক যৌথভাবে এই প্রকল্পের বিষয়ে জানিয়েছেন। ডিকে শিবকুমার বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে দিল্লিতে নিশ্চিত জয় পেতে চলেছে কংগ্রেস এবং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি নির্বাচনে জয়ের পর সরকার গঠন করেই আমরা মহিলাদের জন্য চালু করব নয়া প্রকল্প ‘পেয়ারি দিদি যোজনা’। যেখানে প্রতিমাসে রাজ্যের মহিলাদের ২৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে, যেমনটা আমরা কর্ণাটকে চালু করেছি।’
দেবেন্দ্র যাদব নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘দিল্লিতে স্বপ্ন বিক্রির এক কারিগর বসে আছেন, যিনি বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু সেগুলি পূরণ করতে ব্যর্থ হন। তবে কংগ্রেস সবসময় তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, এই কারণেই মানুষ কংগ্রেসের ওপর ভরসা করে।’
অন্যদিকে অলকা লাম্বা বিজেপির সুরেই কেজরিওয়ালকে আক্রমণ করে বলেন, ‘কেজরিওয়াল তার বিলাসবহুল ‘শিশমহল’-এর জন্য জনগণের করের টাকা ব্যয় করেন, কিন্তু মহিলাদের জন্য কিছুই করেন না। মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকেই এই প্রকল্পটি অনুমোদন করা হবে। ১ মার্চ থেকেই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে এই ভাতা জমা দেওয়া শুরু হবে।’
কংগ্রেস সূত্রে দাবি, দিল্লির নির্বাচনি ময়দানে এবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ঝাঁপাবেন। বড় বড় জনসভা থেকে প্রার্থীদের এলাকায় ছোট ছোট সমাবেশ পর্যন্ত সমস্ত কর্মসূচির জন্য তাঁদের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচিগুলিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, প্রিয়াংকা গান্ধি এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম রয়েছে। এছাড়াও ৩০ জনেরও বেশি নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লাগাতার সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি, হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু, কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার, সচিন পাইলট, অশোক গেহলট, জয়রাম রমেশ, পবন খেড়া, দীপেন্দ্র হুডা, কানহাইয়া কুমার, অজয় রাই, কুমারী শৈলজা, জিগনেশ মেবানি, ভূপেশ বাঘেল, অজয় মাকেন, চরণজিৎ সিং চান্নি।