উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে এল তিন দশক আগের হেতাল পারেখকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ। প্রাক স্বাধীনতা দিবসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানে আরজি করে নিহতের ডাক্তারি ছাত্রীর পরিবারকে সমবেদনা জানান তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরজি কর কাণ্ড নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উত্থাপন করেন ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ। হেতাল পারেখকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ২০০৪ সালে ফাঁসি হয়েছিল ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যর। ওই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের কেস মনে আছে তো? যে সাক্ষী দিয়েছিল, সে এখন বলছে, আমি পাপ বোধ করছি। আমাকে মিথ্যে সাক্ষী দিতে বাধ্য করেছিল সিপিএম। আমরা সেটা চাই না। তাই তদন্তের আগে কাউকে জোর করে দোষী প্রমাণ করা হোক, সেটা আমি চাই না।”
মমতা আরও বলেন, “আপনি দোষী লোককে ফাঁসি দিন, হাজারটা দোষী লোককে ফাঁসি কাঠে চড়িয়ে দিন, কিন্তু একজন নির্দোষকে যেন শাস্তি না দেওয়া হয়, সেটা মাথায় রাখবেন। পাশবিক অত্যাচারে আমরাও ফাঁসি চাই। কিন্তু মৃত্যুর নামে রাজনীতি বরদাস্ত করব না।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “ঘটনার দিন ঝাড়গ্রাম থেকে ফিরছিলেন। এই ঘটনার কথা শোনামাত্র কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সঙ্গে সঙ্গে ফোন করি। মেয়েটির বাবা, মায়ের সঙ্গে কথা বললাম। তাদের আমি বলেছিলাম, পুলিশ তদন্ত করবে। আমি ওদের ফাঁসি চাই। সারা রাত জেগে থেকে তদন্ত করিয়েছি। রাত ২টো পর্যন্ত পুলিশ কমিশনার আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে আসল খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। একটা তদন্ত করতে সময় লাগে। তা না করে কাউকে আগে থেকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা ঠিক নয়।”
এরপরই ধনঞ্জয়ের প্রসঙ্গ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি দুঃখিত, বুদ্ধবাবু সম্প্রতি মারা গেছেন। কিন্তু তাঁর আমলে অনেক ঘটনা ঘটেছিল। ডোরিনা ক্রসিংয়ে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ধনঞ্জয়ের ফাঁসি চাই। আমি চাই না, এভাবে নির্দোষ কাউকে শাস্তি দিতে। তাই পুলিশকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে বলেছিলাম।”
বাম আমলের ধানতলা, বানতলা থেকে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, “রাগ থাকলে আমাকে নিয়ে বলুন। কিন্তু বাংলা মাকে অসম্মান করবেন না। আমরা শান্ত আছি বলে যা ইচ্ছে করবেন? চুপ আছি বলে এক তরফা করবেন? মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি আমি বরদাস্ত করব না।”