উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রমজান মাসে ফুরফুরা শরিফে (Furfura Sharif) গিয়ে ইফতারে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখান থেকে প্রত্যাশিত ভাবে সম্প্রীতির বার্তা দিলেও বিরোধীদের কটাক্ষের জবাবও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সহ বিরোধীদের একাংশ নির্বাচনের আগে মমতার ফুরফুরায় যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার জবাবে মমতা বলেন, ‘আমি যখন দুর্গা পুজো করি, কালী পুজো করি তখন তো কেউ এই প্রশ্ন তোলেন না। তাহলে ইফতারে যোগ দিলে প্রশ্ন উঠছে কেন?’
এরপরে নিজস্ব ঢঙে মমতা আবারও বলেন, ‘আগেও আমি ফুরফুরায় এসেছি, এটা ষোলো বার। আমি যেমন খ্রীশ্চানদের অনুষ্ঠানে যাই তেমনই ঈদ মুবারকেরও যাই। ইফতার নিজে করি, পাঞ্জাবিদের গুরুদোয়ারাতেও যাই, প্রতিটি ধর্মের অনুষ্ঠানেই আমি যাই। কারণ, আমি মনে করি বাংলার মাটি সম্প্রীতির মাটি। তাই যেমন দোলের শুভেচ্ছা জানিয়েছি তেমনই রমজানে আল্লাহতোলা সকলের রোজা কবুল করুন, এই দোয়া করি। ’ মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রতিশ্রুতি দেন ফুরফুরায় পলিটেকনিক কলেজ ও ১০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ আবু বকর সাহেবের নামে করা হবে।
উল্লেখ্য নবান্নে গত সোমবার ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই মমতার ফুরফুরার কর্মসূচির কথা প্রকাশ্যে আসে। যা নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। এদিন ইফতারের পাশাপাশি ৭০ জন পীরসাহেব ও পীরজাদার সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। সামনেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। ১০ বছর পর মমতা ঠিক তার আগেই পা রাখলেন ফুরফুরা শরিফে। যা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই বিরোধীদের একাংশের কটাক্ষের মুখে পড়েছেন তিনি। ভোটের রাজনীতি করতেই তিনি ফুরফুরায় গিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও তার জবাবও দিয়েছেন মমতা। মঞ্চ থেকে পীরজাদারা মমতার ঢালাও প্রশংসা করেও তাদের কিছু দাবি-দাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, মমতা বিলক্ষণ জানেন, বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট তার রাজনীতির প্রাণভোমরা। এখনও সেই ভোট ব্যাংক তাঁর অটুট রয়েছে। তবুও সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সংখ্যালঘুদের নিয়ে নানাবিধ মন্তব্য এবং তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর ও সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর পালটা মন্তব্য ঘিরে রাজ্য জুড়ে যে চর্চা শুরু হয়েছে তা সংখ্যালঘু সমাজ কীভাবে দেখছে তা বুঝে নিতে চেয়েছেন বিচক্ষণ রাজনীতিক মমতা। তাই পীরজাদাদের মনোভাব, ফুরফুরার উন্নয়নের চাহিদা সবটাই প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে বুঝতে চেয়েছেন তিনি। মমতার পরবর্তী রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদক্ষেপে এই ফুরফুরা সফরের কোনও প্রভাব থেকে যায় কিনা সেটাই এখন দেখার।