কলকাতা: কয়েকদিন আগেই নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) জনগণকে ‘উৎসবে ফেরার’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু মহালয়ার দিন থেকেই লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব থেকে শুরু করে একাধিক পুজোয় যেভাবে মানুষের ঢল রাস্তায় নেমেছে, তাতে তাঁরা ‘উৎসবে’ ফেরার ইঙ্গিতই দিচ্ছেন বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যেকেই যাতে এই উৎসবে শামিল হতে পারেন, সেই জন্য তাঁদের আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে। শুধু জনপ্রতিনিধি নয়, কলকাতা শহরে পুজোর কয়েকদিন যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে ও সাধারণ মানুষ যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য কলকাতা পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতিপদ থেকেই ওই বিশেষ দল রাস্তায় নেমেছে।
বুধবার দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র উৎসব সংখ্যা প্রকাশের সময় পুজোর প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোকে কেন্দ্র করে যে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা হয়, তা রাজ্যের অর্থনীতিতে বড় সহায়ক বলেই ধারণা নবান্নের। সেই কারণেই আরজি কর কাণ্ডের মধ্যেই উৎসবে যাতে কোনও ভাটা না পড়ে, সেদিকে নজর রয়েছে নবান্নের। বৃহস্পতিবারও কলকাতার ১৫টি পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয়ের উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুজোয় ঢাকি, মণ্ডপশিল্পী, আলোকশিল্পী, প্রতিমাশিল্পী থেকে শুরু করে ফুচকাওয়ালা পর্যন্ত ব্যবসা করেন। তাঁদের সারা বছরের রুজির একটা বড় মাধ্যম এই পুজো। তাই প্রান্তিক মানুষের কথা মাথায় রেখে তাঁদের উৎসবে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, আমরা সেই কথাই মাথায় রাখব।’
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় এবার প্রায় ২৯০০টি পুজো হচ্ছে। তার মধ্যে বড় পুজোগুলির উদ্বোধন রবিবারের মধ্যেই হয়ে যাচ্ছে। মহালয়ার সন্ধ্যায় লেকটাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোয় বাঁধভাঙা ভিড় উপচে পড়েছিল। বৃহস্পতিবার চেতলা অগ্রণী, টালা প্রত্যয়, হাতিবাগান সর্বজনীন সহ একাধিক বড় পুজোয় ভিড় উপচে পড়েছে। আর সেই কারণেই সতর্ক কলকাতা পুলিশ। বুধবার বিকালেই লালবাজারে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা পদস্থ পুলিশকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, এদিন থেকেই পুলিশের বিশেষ বাহিনী রাস্তায় নামবে। এদিনই পুলিশ কমিশনার কলকাতার একাধিক পুজোমণ্ডপ ঘুরে দেখেন। মনোজ ভার্মা বলেন, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলার সঙ্গে কলকাতায় পুজো সম্পন্ন করাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব। মানুষ উৎসবে শামিল হয়েছে। কলকাতা পুলিশ তাঁদের সমস্তরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে। রাতেও কলকাতা শহরে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। তাই পুজোর সময় শহরে যান চলাচলে যাতে কোনওরকম ব্যাঘাত না ঘটে সেই দিকেই নজর রয়েছে আমাদের।’ পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘পর্যাপ্ত সংখ্যায় সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশও থাকবে। মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়াই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।’