কলকাতা: রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে নামার কথা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিকল্পিতভাবে রাজ্যকে ভাসিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তাঁর এই আন্দোলনের ডাক। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা অবশ্য অন্যরকম। আরজি করের নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে জুনিয়ার ডাক্তার সহ সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে এমনিতেই অস্বস্তিতে সরকার ও শাসকদল তৃণমূল। দু-দুবার শাসকদল তৃণমূল এই আন্দোলনের মোকাবিলায় তৃণমূলের সংগঠনকে রাস্তায় নামিয়ে ধাক্কা খেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং দলকে পাশে নিয়ে রাস্তায় নেমেও সুবিধা করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে সিপি সহ শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিকদের অপসারণের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।
তবু ক্ষোভ মেটেনি আন্দোলনকারীদের। রাজ্য পরিস্থিতি এখনও প্রায় অস্থিরই। তা মোকাবিলায় বন্যা পরিস্থিতিকে অস্ত্র করে পালটা কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এতে একদিকে যেমন কেন্দ্র ও বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের জিগির তোলা যাবে, তেমনি পাশাপাশি আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে রাজ্যে যে সরকার-বিরোধী আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এটা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী পালটা কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন শুরু করার ডাক দিয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের সময়েই এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দলের রাজ্য নেতৃত্বের শীর্ষস্থানীয় দু’একজনের সঙ্গে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন শুরু করা নিয়ে কথা বলেন। তাঁদের জানান, কলকাতা ফিরে বিষয়টি নিয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করবেন। আরজি কর কাণ্ড ঘিরে রাজ্যে প্রায় অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলনে নামা ছাড়া শাসকদলের কোনও উপায় নেই বলেই দলের শীর্ষ নেতাদেরও ধারণা। সামনে পুজো, আবার সেই সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি, দুইয়ে মিলে আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনের চাপকে অনেকটাই সামাল দেওয়া যাবে বলেই বিশ্বাস দলের ওই একাংশের।

