মানিকচক: ৭২ ঘণ্টা কেটে গেলেও মানিকচকের বেসরকারি আবাসিক স্কুলের হস্টেলে রহস্যজনকভাবে মৃত ছাত্র শ্রীকান্ত মণ্ডলের দেহ সৎকার করল না তার পরিবারে। প্লাইউডের তৈরি কফিনে বরফ দিয়ে মৃতদেহ রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট সন্তোষজনক মনে না হলে মৃতদেহের ফরেন্সিক তদন্তের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবারটি।
শনিবার ভূতনি হিরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেদারটোলার মৃত ছাত্রের বাড়িতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বাড়িতে দুটি ঘর। শ্রীকান্ত যে ঘরটিতে থাকত, সেই ঘরেই রাখা হয়েছে তার কফিনবন্দি দেহ। মৃত ছাত্রের বাবা প্রেমকুমার মণ্ডলের প্রথম থেকেই অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মারধরে মৃত্যু হয়েছে শ্রীকান্তের। অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মৃতদেহ আগলে রেখে পরিবারটি প্রতিবাদ জানিয়ে যাবে বলে ঠিক করেছে। শনিবার মানিকচক থানার আইসি সুবীর কর্মকারের সঙ্গে দেখা করেন পরিবারের সদস্যরা। থানার আইসি পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দেন ও মৃতদেহ সৎকার করাতে বলেন। কিন্তু আইসির অনুরোধে সাড়া দেননি তাঁরা।
গত বুধবার রাতে মানিকচকের একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলের হস্টেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শ্রীকান্ত মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় একটি রুমে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছে ছাত্রটি। কিন্তু ছাত্রের পরিবারের দাবি, প্রধান শিক্ষকের মারে তার মৃত্যু হয়েছে। পরে আত্মহত্যা প্রমাণের জন্য মৃতদেহের গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিবারটির অভিযোগ, সেদিন অভিযোগ জানাতে গেলে মানিকচক থানা অভিযোগ গ্রহণ করেনি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করা হলেও সারাদিন পর ছেড়ে দেওয়া হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে মালদা মেডিকেলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বারবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে শেষমেশ তিনি মোবাইল সুইচ অফ করে দেন।