মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: লোকসভা ভোটে (Lok sabha election 2024) ২০টি ওয়ার্ডের ভোটে এগিয়ে ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা (Manoj Tigga)। এবার তার পুরস্কার শহরবাসীকে দিতে চান সাংসদ মনোজ। সাংসদ এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকা শহরের উন্নয়নের কাজে খরচ করতে চান মনোজ টিগ্গা। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘লোকসভা এলাকার সব জায়গার মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছি। তবে আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দারা দু’হাত তুলে আমাকে অনেক আশীর্বাদ করেছেন। শহরবাসীর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠেই এই শহরের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আমি শহরের উন্নয়নের জন্য পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা বলব।’ আলিপুরদুয়ার পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, ‘সাংসদ চাইলে দেখা করতেই পারেন। তবে এরকম কোনও প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি। তাই সাংসদ আসলে কী বলতে চাইছেন, সে নিয়ে কোনও আলোচনা না করে কিছুই বলা সম্ভব নয়।’
একসময় আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন বিজেপির জন বারলা। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছিলেন। জন বারলাকে শহর বা লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় খুব বেশি দেখা যেত না এমন অভিযোগ ছিল শাসকদলের নেতাদের। শহরে জন বারলার একটি অফিসও ছিল। তবে সেখানেও তিনি অনুপস্থিত থাকতেন। শাসক শিবিরের আরও অভিযোগ ছিল, জন বারলা জেলার উন্নয়নে কোনও কাজ করেননি। শাসকদলের সেই প্রচারকে এবারে শুরু থেকেই ভোঁতা করতে চান নবনির্বাচিত সাংসদ মনোজ টিগ্গা। তাই এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ফের তাঁর বক্তব্য, ‘আলিপুরদুয়ারবাসীর প্রথম প্রত্যাশা ছিল রেলের জমিতে সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা। আমি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী, সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এনিয়ে কথা বলব। আশা করছি, আলিপুরদুয়ারবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব।’ লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনের অদূরেই হাসপাতাল শিলান্যাস অনুষ্ঠানের মঞ্চও বাঁধা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা ভেস্তে গিয়েছিল। হাসপাতালের শিলান্যাস না হওয়ায় বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।
জন বারলা সাংসদ হওয়ার পর জেলা শাসকের সঙ্গেও বারবার দেখা করতে এসেছিলেন। বারলার অভিযোগ ছিল, জেলা শাসক তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ জানানো ছাড়া অন্য কোনও পথেও তাঁকে হাঁটতে দেখা যায়নি। গেরুয়া শিবিরের একাংশেরও অভিযোগ ছিল, বারলা সাংসদ হয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা সদরেও খুব বেশি পা রাখেননি। মনোজ টিগ্গা কিন্তু সাংসদ হিসেবে নিজেকে দলমতের ঊর্ধ্বে তুলে নিজেকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করার পাশাপাশি শাসকদলের পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার ক্ষেত্রেও ফাঁকফোঁকর রাখতে চান না। শহরে এসে মনোজ স্কুটি, বাইকে চেপে নিয়মিত এ পাড়া থেকে সে পাড়ার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলা, তাঁদের অভাব অভিযোগ শোনার জন্যও সময় দেবার কথা এদিন জানিয়েছেন। বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার সঙ্গে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের অনেকের ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। নিজের এলাকার উন্নয়নে তিনি প্রয়োজনে রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে এমনকি দরকার হলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন।