উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ওডিশায় তিনটি ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওডিশার বালেশ্বর জেলার বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আপ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে। লাইনচ্যুত হয়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫ টি বগি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের দুটি বগিও লাইন থেকে ছিটকে যায়। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫০ জন। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুর্ঘটনাস্থলে আসছেন।
ভারতীয় রেলের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আজ সন্ধ্যা ৬ টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বালেশ্বর স্টেশন থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে ১২৮৪১ শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং ১২৮৬৪ এসএমভিবি বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এরপরই উদ্ধারকার্যে প্রথমে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারাই। ঘটনাস্থলে আসে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ), মেডিক্যাল টিম। ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। ওই দলে ২২ জন সদস্য আছেন। সেইসঙ্গে বিশেষ দলের আরও ৩২ জন ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মনোজকুমার যাদব জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে একটি আছে। আরও পাঁচটি দলকে পাঠানো হচ্ছে। কটক থেকে ওই পাঁচটি দল যাচ্ছে। যা দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রাথমিকভাবে ইতিমধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও প্রায় চার শতাধিক যাত্রী আটকে আছেন বলে খবর। নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ১২ জন চিকিৎসক। যাচ্ছে ২৫ টি অ্যাম্বুল্যান্স। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
এদিকে, ওডিশার ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারপিছু ১০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। যাঁরা গুরুতর আহত, তাঁদের দু’লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হবে। যাঁরা কম আহত হয়েছেন, তাঁদের ৫০,০০০ টাকা দেওয়া হবে।
ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বলেন, ‘আমি এই ভয়ংকর রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছি। আমি আগামিকাল সকালে আকাশপথে দুর্ঘটনাস্থলে যাব। আমরা সেখানে পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব।’
খড়্গপুরের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার জানিয়েছেন, মোট ১৫ টি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে। সরকারি মতে কমপক্ষে ৩০ যাত্রীর মৃত্যু হলেও বেসরকারি মতে তা কমপক্ষে ১০০।