রাজেশ দাস, গোপালপুর: রোগী রয়েছে তবে চিকিৎসকের অভাব। তাই মাথাভাঙ্গা (Mathabhanga)-১ এর গোপালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র (বিপিএসসি) কার্যত ধুঁকছে। ২০২১ সালে এই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চালু হলেও সেখানে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক মেলেনি বলে অভিযোগ। সপ্তাহে দু’দিন দুজন চিকিৎসক থাকলেও বাকি দিনগুলোতে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে রোগীরা ফিরে যেতে বাধ্য হন। ওই দু’দিনই কেবল একবেলা করে আউটডোর পরিষেবা চালু থাকে। তবে ইন্ডোর পরিষেবা এখনও চালু হয়নি। আর এইসব নিয়েই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন এমন অবস্থা চলতে থাকায় তাঁরা চিকিৎসকের অভাবে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একাধিকবার আবেদন জানানো হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। যদিও এবিষয়ে সিএমওএইচ হিমাদ্রিকুমার আড়ি বলেন, ‘চিকিৎসকের অভাবের জন্যই এমন সমস্যা হচ্ছে। তবে তা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
জরুরি চিকিৎসার জন্য গ্রামবাসীদের প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হয় বলে দাবি। এদিকে, আবার এলাকাবাসীর একাংশ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চারপাশে কোনও সীমানা প্রাচীর না থাকায় সেখানকার মাঠে সন্ধ্যার পর দুষ্কৃতীরা নেশার আসর বসায়। এক গ্রামবাসী ধনেশ বর্মন বলেন, ‘সপ্তাহে দু’দিন আউটডোর পরিষেবা খোলা থাকে। তবে দীর্ঘদিন কেটে গেলেও এখনও ইন্ডোর পরিষেবা চালু হয়নি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তা-ও পরিষেবা মেলে। কিন্তু বিকেলের পর কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।’ আরেক গ্রামবাসী সুমন্ত বর্মন জানান, ওই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত সহ কেদারহাট, নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ নির্ভর করেন। তাই সপ্তাহে সাতদিন ও ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা পরিষেবা চালু করার পাশাপাশি ইন্ডোর পরিষেবাও চালু করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, এনিয়ে কোচবিহার জেলা বিজেপির কিষান মোর্চার সম্পাদক রঞ্জন বর্মন শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি বললেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই স্থায়ী চিকিৎসকের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বর্তমান সরকারের তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই।’ তবে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ করা না হলে আগামীদিনে এনিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।

