বালুরঘাটঃ বাবা উমেশ প্রসাদ সিপিএমের হোলটাইমার। দলের কাজ নিয়ে সব সময় ব্যস্ত। দিন-রাত পার্টি অফিসে পড়ে থাকা। তাঁর ছেলে এবার মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। ৬৯১ নম্বর পেয়ে তৃতীয়স্থান দখল করেছে উদয়ন প্রসাদ। গৌড়বঙ্গে ও সম্ভাব্য প্রথম ও উত্তরবঙ্গে দ্বিতীয়। তার এই সাফল্যের নেপথ্যে নায়ক সাত মাস্টারমশাই, যাঁরা বিনা পয়সায় উদয়নকে পড়িয়েছেন সারাবছর।
উদয়নের বাড়ি বালুরঘাট শহরের প্রাচ্য ভারতিতে। প্রাক-প্রাথমিক থেকেই ওর পড়াশোনায় ভীষণ আগ্রহ। অথচ সংসারে আয় তেমন নেই বললেই চলে। বাবা পার্টির হোলটাইমার হওয়ার সুবাদে দল থেকে কিছু সাম্মানিক পান। তা দিয়ে চলে সংসার। দিনের সিংহভাগ সময় প্রাণাধিক প্রিয় রাজনৈতিক দলের জন্য সময় দিলেও পরিবারের দিকেও খেয়াল রাখতেন তিনি। বিশেষ করে ছেলের দিকে। ওর লেখাপড়ায় যাতে কোনও খামতি না থাকে সেদিকে আগাগোড়াই সজাগ দৃষ্টি ছিল বাবার। ছেলের দিকে নজর ছিল মা বিন্দুবারুই প্রসাদেরও। উদয়ন একমাত্র সন্তান হওয়ায় সমস্ত আশা-ভরসা তাকে ঘিরেই। বাবা-মায়ের সেই ভরসার জায়গা থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসেনি উদয়ন। ছেলের সাফল্যে মুখে চওড়া প্রসাদ দম্পতির। ভবিষ্যতে ও ডাক্তার হতে চায়।
উদয়ন প্রসাদ বলে, ‘অর্থের সমস্যা রয়েছে। অনেক কষ্ট করে বাবা মা পড়াচ্ছেন। তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। পড়ার বইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই আমার পছন্দ। মেধা তালিকায় জায়গা পাব আশা করিনি। এর পিছনে বাবা-মা, স্কুল ও গৃহ শিক্ষক – সকলের অবদান রয়েছে।’
বাবা উমেশ প্রসাদ বলেন, ‘ছেলে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল। আমি ওকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছি মাত্র। আগামীদিনে ডাক্তার হতে চায়। প্রয়োজন প্রচুর অর্থের। তবে সেই অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। চেষ্টা থাকলেই টাকা জোগাড় হয়ে যাবে। সরকারি অর্থসাহায্য পাওয়ার আশায় রয়েছি।’