দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: বিডিও, তাঁর দপ্তরের কয়েকজন আধিকারিক, ব্লকের কন্যাশ্রী নোডাল অফিসার, পুলিশকর্তারা গিয়েছিলেন স্কুলের মিড-ডে মিলের গুণগতমান যাচাই করতে। কিন্তু গোল বাধল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। সমষ্টি উন্নয়ন করণকর্তা অর্থাৎ বিডিওকে হাতের কাছে পেয়ে তাঁরা নিজেদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ উগরে দেন। জানান, হাড়ভাঙা খাটুনির পর তাদের কত টাকা করে দেওয়া হয়।
বিডিওকে তাঁরা বলেন, মাঝেমধ্যে ডেপুটেশন দেওয়া হলেও তাঁরা নিজেদের সমস্যার কথা ঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন না। আচমকা এই পরিস্থিতিতে অপ্রস্তুতে হয়ে পড়েন বিডিও। বিপাকে পড়েন তাঁর সঙ্গে থাকা প্রশাসনিক কর্তারা। যদিও পরিস্থিতি বুঝে ঠান্ডা মাথায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অভাব–অভিযোগ শোনেন তিনি। আশ্বাস দেন সমস্যার যথাযথ সমাধানের।
বৃহস্পতিবার এমন বিড়ম্বনার সাক্ষী রইল দেবীনগর কেসি আর বিদ্যাপীঠ। স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রায়গঞ্জ ব্লকের বিডিও শ্যারণ তামাং। ছিলেন ব্লকের কন্যাশ্রী নোডাল অফিসার সুভাষ আর্য, পুলিশকর্তা বৈদ্যনাথ সরকার। স্কুল পরিদর্শনের পর তাঁরা মিড- ডে মিলের ব্যবস্থা দেখতে যান। সেখানেই পড়ুয়াদের সঙ্গে হাতে থালা নিয়ে মিড-ডে মিল খেতে শুরু করেন। ছিলেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রাখি বিশ্বাস সহ অন্যরা। কারণ, স্কুল পরিদর্শনে এসেছেন বিডিও। আর সেটা করতে গেলে মিড-ডে মিল তো খেতেই হয়। পড়ুয়াদের সঙ্গে তৃপ্তি সহকারে তিনি খেলেন মিক্সড খিচুড়ি ও পাঁপড় ভাজা। তাদের সঙ্গেই খাওয়া-দাওয়া করেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা এবং স্কুলের অন্য প্রশাসনিক কর্তারা।
এই পর্যন্ত ব্যাপারটা ঠিক ছিল।
খাওয়া শেষ হতে না হতেই মিড ডে- মিলের কর্মীরা বিডিওকে তাঁদের বেতন নিয়ে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা তুলে ধরেন। মিড-ডে মিল কর্মী মুক্তি বোস বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে ডেপুটেশনে গেলেও সরাসরি আমরা আমাদের সমস্যা কাউকে বলতে পারি না। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর মাসে মেলে ২ হাজার টাকা। তাও আবার ১০ মাস।’ বিডিও তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের দাবিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ প্রশাসনিক কর্তারা মিড-ডে মিলের খাতাপত্র দেখেন। স্কুলের প্রশংসা করেন। পরে শ্যারণ তামাং বলেন, ‘আজ এই স্কুলের মিড-ডে মিল খেলাম। স্কুলটিকে মডেল স্কুল করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। পঞ্চায়েতের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলব।’