সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: বাবলা সরকার খুনের ঘটনার পরে রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেনের নিরাপত্তা বাড়ানো হল। আগে ছিলেন একজন পার্সোনাল বডিগার্ড ও কনভয়। এবার বাড়ল আরও তিন রক্ষী। পাঁচ রক্ষীর মধ্যে একজন এএসআই পদের পুলিশ অফিসারও আছেন। আবার মন্ত্রী বাড়তি নিরাপত্তা পাওয়ায় এবার তৃণমূলের অন্যান্য নেতা-নেত্রীদের দাবি, তাঁদের জন্যও রক্ষী মোতায়েন হোক।
মন্ত্রী তজমুল যে এলাকার বিধায়ক সেই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের সভানেত্রী মর্জিনা খাতুনের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি।
জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনার আক্ষেপ, ‘আমি তৃণমূলের ব্লক সভানেত্রী। দলের কাজে রাতবিরেতেও এলাকায় ঘুরতে হয়। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় আছি। এর আগেও জেলা পুলিশকে নিরাপত্তার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা শোনেননি।’
বিরোধীরা অবশ্য কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন তুলছেন, যে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার কোনও সমস্যা নেই বলে দাবি করা হয় সেখানে
শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের এত নিরাপত্তার আশঙ্কা কেন?
অন্যদিকে, দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মেনে নিলেন আরেক জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান। পাশাপাশি তাঁর দাবি, বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় হরিশ্চন্দ্রপুরে বিহারের দুষ্কৃতীরা এসে অপরাধমূলক কাজকর্ম করে চলে যাচ্ছে।
ওই প্রসঙ্গে এলাকার বিরোধীদের দাবি তৃণমূলের বিপদ বিরোধী দলের কারও কাছ থেকে নয়, তাদের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দলের নেতৃত্বের মধ্যে আক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে চলেছে। নিজেদের দলের লোকই তাদের কাছে বিপদের কারণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবলা সরকার খুনের ঘটনার পর থেকেই মালদা সহ বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের সরকারি নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী হওয়াতে এবং বাবলা সরকার খুনের ঘটনায় দুই বিহার দুষ্কৃতীর ধরা পড়ার পর থেকেই এলাকার শাসকদলের নেতাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এলাকার দলীয় সূত্রে দাবি, এলাকার অনেক হেভিওয়েট নেতা-নেত্রী এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী রাখার চিন্তাভাবনাও করছেন।
অন্যদিকে, বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য রূপেশ আগরওয়ালা বলেন, ‘তৃণমূল নেতাদের ভয় বিরোধীদের থেকে নয়। পুলিশ এখন সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তার থেকে তৃণমূল নেতাদের নিরাপত্তায় দিতে ব্যস্ত।’