পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: আর কয়েকমাস পরে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তাই বিজেপি কর্মীদের মনোবল বাড়াতে মঙ্গলবার বালুরঘাটে এলেন বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। বালুরঘাট রবীন্দ্র ভবনে দলের কর্মীদের নিয়ে একটি সভা করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী, জেলা সম্পাদক বাপি সরকার, বালুরঘাট শহর মণ্ডল সভাপতি সমীরপ্রসাদ দত্ত, জেলার দুই বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়, বুধরাই টুডু প্রমুখ।
সভা থেকে মিঠুন জেলা নেতৃত্ব ও কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন। এরপর ১৫০ জন কর্মীকে নিয়ে ‘মিঠুন যোদ্ধা’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির কথাও ঘোষণা করেন।
কর্মীসভা শেষে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সংবাদমাধ্যমের তরফে মিঠুনকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর তরফে সটান জবাব এল, ‘গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল। এসব এখন ছাড়ুন, এগুলি নিয়ে পরে কথা হবে।’
তাঁর এমন মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। যেখানে শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদার সবাই ২০২৬-এর ভোটে বাংলায় পদ্মফুল ফুটবে বলে আশাবাদী। সেখানে মিঠুনের এমন মন্তব্যের মানে কী? তিনি কি তবে দলের অতিরিক্ত আশাবাদ থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন?
তৃণমূল (TMC) অবশ্য তাঁর এই এড়িয়ে যাওয়া মন্তব্যে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘সত্যি কথাটা ওঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। সকলেই জানে তৃণমূলই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পর সরকার গড়বে। শুধু ব্যবধানটা কত হবে সেটাই এখন দেখার। মানুষ বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি বুঝে গিয়েছে। তাই ফলাফল নিয়ে ওঁদের গোঁফে তেল দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই।’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিকেই বাংলাদেশ দিয়ে ঘেরা। তাই সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে। কারণ ইতিমধ্যে রাজ্যে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এনিয়ে মিঠুন জানালেন, কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে তার সমাধান হয়ে যাবে। এত বড় একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রক্রিয়া। একটু সময় লাগতে পারে, তবে চিন্তার কিছু নেই।
এসআইআর-এর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতায় মিছিল প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘যাঁরা ভারতীয় নন তাঁদের জন্য কী মিছিল করা হচ্ছে? মনে হচ্ছে বাংলাদেশকে কিছু বার্তা দেওয়ার জন্য এমন প্রতিবাদ করা হচ্ছে। যে দেখুন আপনাদের লোকেদের জন্য আমরা লড়ছি। আমরা তৈরি আছি চলে আসুন।’
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকে তাঁদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘তাঁরা নিজেদের দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পশ্চিমবঙ্গ তো ধর্মশালা হয়ে যাচ্ছিল।’
এরপর বিজেপি থেকে মিঠুনকে আগামীতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘আমাদের দলের নির্দিষ্ট করে কাউকে ঠিক করা হয় না। যদি আমরা জিততে পারি তারপর ওপরমহল থেকে ঠিক করবে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’

