সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

MJN Medical College | মেডিকেলে চিকিৎসায় নয়া কেচ্ছা, ইসিজি করাচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী

শেষ আপডেট:

শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (MJN Medical College) রোগীদের ইসিজি (ECG) করাচ্ছেন একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী! শুক্রবার এরকমই একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়ায়। টেকনিসিয়ানের (Technician) অভাব থাকলেও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওই কাজ কেন করানো হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এরকম ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে ঘটলেও এমএসভিপি-র কাছে কোনও খবরই নেই বলে সাফাই দিয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকের নির্দেশেই তিনি ইসিজি করছিলেন বলে জানিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণির ওই কর্মী।

এমএসভিপি ডাঃ রাজীব প্রসাদ বলেছেন, ‘ইসিজি বিভাগে টেকনিসিয়ান রয়েছেন। তাঁদেরই ইসিজি করার কথা। অন্য কেউ করছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। নোডাল অফিসারের কাছে রিপোর্ট চাইব।’ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চতুর্থ শ্রেণির ওই কর্মীর বক্তব্য, ‘এখানে টেকনিসিয়ানের অভাব রয়েছে। রোগীর সংখ্যাও অনেক বেশি। তাই ডিপার্টমেন্টের নির্দেশেই রোগীদের স্বার্থে কাজ করেছি।’ তবে কার নির্দেশে তিনি একাজ করছেন তা স্পষ্ট নয়। যদি ওই কর্মীর দাবি সত্যি হয় তাহলে ধরে নিতে হবে এবিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরেও রয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, বহির্বিভাগে যে সমস্ত রোগী চিকিৎসা করান তাঁদের মধ্যে প্রতিদিনই ৫০-৬০ জনের ইসিজি করতে হয়। এছাড়াও জরুরি ও অন্তর্বিভাগের রোগীদের জন্য ২৪ ঘণ্টাই সংশ্লিষ্ট বিভাগ খোলা থাকে। সবমিলিয়ে চারজন টেকনিসিয়ান রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে দিয়ে ইসিজির কাজ করানোর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এক রোগীর পরিজন শম্ভু বর্মনের কথায়, ‘হাসপাতালে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় কে টেকনিসিয়ান, আর কে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের উপরেই আমাদের নির্ভর করে থাকতে হয়। এখন যদি দেখা যায় ইসিজির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী করছেন তাহলে তো চিন্তা হবেই।’ আরেক রোগীর আত্মীয় সুব্রত রায় বলেছেন, ‘এভাবে ইসিজি হলে তার ভুল রিপোর্ট আসার সম্ভাবনাই তো বেশি। তাহলে ভুল রিপোর্ট দিয়ে রোগীর চিকিৎসা কীভাবে হবে? রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হবে। সেই দায়িত্ব কে নেবে? কর্তৃপক্ষের দ্রুত এবিষয়ে পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।’

এমজেএন মেডিকেলে পরীক্ষানিরীক্ষা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এক্স-রে, আল্ট্রাসাউন্ডের মতো পরীক্ষার ক্ষেত্রে টেকনিসিয়ানের অভাবে কাউকে তিন মাস আবার কাউকে চার মাস পর পরীক্ষার সময় দেওয়া হচ্ছে। আরও একধাপ এগিয়ে এবার ইসিজি করা শুরু করেছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। সব মিলিয়ে এধরনের ঘটনায় এমজেএন মেডিকেলের পরিষেবা নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে।

Kuhelika Barman
Kuhelika Barmanhttps://uttarbangasambad.com/
Kuhelika Barman is working as Sub Editor Since 2016. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Share post:

Popular

More like this
Related

Darjeeling | শুটিংয়ের জন্য দার্জিলিংয়ে অনুরাগ, অনীতের সঙ্গে সাক্ষাৎ 

রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: কুয়াশামোড়া দার্জিলিংয়ের রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে...

RG Kar Case | আরজি কর কাণ্ড, নির্যাতিতার মা-বাবর আবেদনে মান্যতা, আর্জি শুনতে পারবে কলকাতা হাইকোর্ট

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar...

Harishchandrapur | নেই ডাক্তার, ফাঁকা জেলা পরিষদের চেম্বার  

সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের ইসলামপুর পঞ্চায়েতে...

Kumarganj | গঙ্গারামপুরে হদিশ আরেক নাবালিকার, গুরুগ্রামে উদ্ধার দশম শ্রেণির ছাত্রী

সাজাহান আলি, কুমারগঞ্জ: তদন্ত চালিয়ে দুই ছাত্রীর নিখোঁজ রহস্যের...