Friday, March 29, 2024
HomeBreaking News১৪৭ কিলোমিটার বেগে মোখার তাণ্ডব বাংলাদেশে, লন্ডভন্ড কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

১৪৭ কিলোমিটার বেগে মোখার তাণ্ডব বাংলাদেশে, লন্ডভন্ড কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ঘন্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে মায়ানমারে তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি মোখা ঘূর্ণিঝড় ধ্বংসলিলা চালাচ্ছে বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলার সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। সেখানে ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ১৪৭ কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই এই দ্বীপ এলাকায় তিন শতাধিক বাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টিনের চালাসহ দুর্বল স্থাপনাগুলো ভেঙে পড়ছে।এখনও পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসাদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজার ও টেকনাফ উপজেলায়। সেন্ট মার্টিনে এখনো তাণ্ডব চলছে। সেখানে বেলা মোথার কারণে একটার সময় ছিল বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার, আড়াইটায় তা বেড়ে ১৪৭ কিলোমিটারে পৌঁছায়। এখনও ভয়ংকরভাবে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়।

এক প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেন্ট মার্টিনের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর দিয়ে মোখা অতিক্রম করেছে। তবে এর ৫০ শতাংশের বেশি অংশ মায়ানমারের ওপর দিয়ে গেছে। সেন্ট মার্টিনে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি অংশ এলে তার বড় ধরনের প্রভাব কক্সবাজার পর্যন্ত থাকত।

আবহাওয়াবিদ আসাদুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র চলে যাওয়া মানেই ঝড় শেষ নয়। এর শেষ ভাগ যেতেও সময় লাগবে। মোখার শেষ ভাগ সেন্ট মার্টিন অতিক্রম করতে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর তা শিথিল হয়ে যাবে। সেন্ট মার্টিনে জলোচ্ছ্বাস ও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনও জানা যায়নি বলে উল্লেখ করেন আসাদুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, মোখার দাপটে আবহাওয়া অফিসের তিন তলা ভবন কাঁপছে। আশপাশের টিনের চালা, দুর্বল স্থাপনা ভেঙে পড়ছে। ১৪৭ কিলোমিটার বাতাসে দুর্বল স্থাপনা টিকে থাকে না। তবে জলোচ্ছ্বাসের খবর এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, আগামীকাল থেকে ঢাকা ও সারা দেশে বৃষ্টি ছড়িয়ে যেতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবাল সমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে বিকেল পাঁচটায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার অন্তত ৩৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কয়েক’শ গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল রিসোর্ট ও কটেজে ত্রানশিবির করা হয়েছে। সেখানে অবস্থান করছেন স্থানীয় প্রায় ৬ হাজার মানুষ। বেশির ভাগই শিশু ও নারী।

সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আজ সকাল থেকে দ্বীপের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। বেলা দেড়টার পর থেকে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করতে শুরু করে। বেলা দুইটার পর প্রবল গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। এতে লোকজনের ঘরবাড়ি, গাছপালা ভেঙে পড়ছে। গাছ পড়ে আহত হয়েছেন ১০-১৫ জন। এর মধ্যে একজন নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সেন্ট মার্টিন বাজারের ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দ্বীপের লোকজনের ঘরবাড়ি, গাছ পালা ভেঙে যাচ্ছে। ২০-২৫টি নারকেলগাছ উপড়ে পড়েছে। আতঙ্কে লোকজন ছোটাছুটি করছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে যাঁরা অবস্থান করছেন, তাঁরা ভয়ে কান্নাকাটি করছেন।

সেন্ট মার্টিন ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ খান বলেন, আজ বেলা দুইটা থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা তীব্র গতিতে আঘাত হানছে। সমুদ্রের জোয়ারের জল বাড়ছে। জোয়ারের জল স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-ছয় ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে দ্বীপের সৈকতে আঘাত হানছে। তাতে পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিম সৈকতের ২০-২৫টি হোটেল–রিসোর্টসহ লোকজনের কিছু ঘরবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। রাতের প্লাবনে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর মতো টেকসই বেড়িবাঁধ সেন্ট মার্টিনে নেই।

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular