প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ঠিক একবছর আগে শেষবার ভারত সফরে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেবার তিস্তা ইস্যুতে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল তাঁকে। এক বছরের মাথায় ৯-১০ সেপ্টেম্বর ফের ভারতে আসছেন হাসিনা। প্রত্যাশিতভাবে আরও একবার উঠেছে তিস্তা প্রসঙ্গ।
রবিবার বাংলাদেশের বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলা জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে তিস্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিন মোমেন বলেন, ‘তিস্তা প্রসঙ্গ নিশ্চয়ই আমাদের প্রধানমন্ত্রী উত্থাপন করবেন। তবে অন্যান্য ইস্যুও আছে আমাদের। ৫৪টি অভিন্ন নদী ইস্যু আছে, গঙ্গা চুক্তির মেয়াদও সামনে শেষ হবে। এই সব বিষয় নিয়ে যৌথ নদী কমিশনও আলোচনা করে যাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক উচ্চ পর্যায় থেকেও আমরা তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে আলোচনা করে এসেছি বা আলোচনায় রেখেছি। এবারও আশা করছি প্রধানমন্ত্রী সেটা করবেন।’
এদিকে, ডিসেম্বরে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। হাসিনা জানেন ভোটের আগে তিস্তা নিয়ে কোনও ইতিবাচক বার্তা না দিতে পারলে, তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোটব্যাংকে। কিন্তু নদী জলবণ্টন ইস্যুটি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি অগ্রাহ্য করে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি সম্পাদন করা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়।
উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করে বাংলাদেশকে তিস্তার জল দেওয়ার প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী খারিজ করেছেন অতীতেই। মমতা সাফ জানিয়ে ছিলেন, উত্তরবঙ্গকে বিপদের মুখে ঠেলে এই চুক্তি করবেন না তিনি। ফলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
হাসিনা জানেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবুজ সংকেত ছাড়া তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে না। গত বছর এই কারণেই তিনি মমতাকে চিঠি লিখে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ফলে অধরা থেকে যায় তিস্তার জলবণ্টনের বিষয়টি। এবারও কি মমতাকে কাছে টানার চেষ্টা করবেন হাসিনা? জানাবেন কি আমন্ত্রণ? এসব প্রশ্ন উঠছে।