উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ধ্যান করলে কেউ ক্যামেরা নিয়ে করে?’, বিবেকানন্দ রকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) ধ্যান (Meditation) নিয়ে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন বারুইপুরের এক জনসভায় মমতা বলেন, ‘আপনি আর থাকবেন না মোদিবাবু। আপনার মেয়াদ ৪ তারিখ পর্যন্ত। বরং আপনি গিয়ে ধ্যান করুন।‘ মমতার আক্ষেপ, তিনি নিজেও ভেবেছিলেন কন্যাকুমারী যাবেন। কিন্তু সেই জায়গাটাও আরএসএস দখল করে নিল। তাই সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেল। তিনি বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ হয়, কেন সবাই চুপচাপ থাকে। কেন কেউ প্রতিবাদ করে না। আমার খুব দুঃখ হয় ওই জায়গাটা ঋষি অরবিন্দ তৈরি করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের খুব প্রিয় জায়গা ছিল। আরএসএস (RSS) ওটা দখল করে নিল। তাঁর অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই ধ্যানের ব্যাপারটা পুরোটাই দেখনদারি। প্রত্যেকবার যেদিন শেষ নির্বাচন তার আগে কোথাও না কোথাও ঢুকে বসে থাকে। আর দেখায় ধ্যান করছেন। পুরো জায়গাটা এয়ার কন্ডিশন বানিয়ে নেয়।‘
প্রসঙ্গত, আগামী ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশ (Poll Result)। তার আগেই তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ রকে (Vivekananda Rock Memorial) ধ্যানে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই খোদ স্বামীজি ধ্যানস্থ হয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ মে সপ্তম দফার ভোটপ্রচারের শেষদিন তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) তিনদিনের সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ৩০ মে সন্ধ্যা থেকে ধ্যান মণ্ডপমে ধ্যান শুরু করবেন। সেই ধ্যান চলবে ভোটের শেষদিন ১ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত। সপ্তম দফাতে মোদির কেন্দ্র বারাণসীতেও ভোট রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যা নাগাদ কন্যাকুমারী (Kanniyakumari) থেকে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের আগেও উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথে একটি গুহায় ধ্যান করেছিলেন মোদি। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পরে কেদার-যাত্রীদের কাছে সেই গুহা অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে ওঠে। কেদারনাথ থেকে এক কিমি মতো হাঁটাপথে ১১ হাজার ৭০০ ফুট উচ্চতার ওই গুহা এখন রুদ্র ধ্যানগুহা নামে পরিচিত।
বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে অবস্থিত হিন্দুদের একটি পবিত্র স্মারকস্থল ও জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। এটি কন্যাকুমারীর বাবাতুরাইয়ের কাছে মূল ভূখণ্ড থেকে ৫০০ মিটার দূরে সমুদ্রের উপর অবস্থান করছে। বিবেকানন্দ রক ভারতের প্রধান স্থলভাগের দক্ষিণতম বিন্দু। ১৮৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বামী বিবেকানন্দ এখানে এসে এই শিলাখণ্ডের উপর বসে দীর্ঘক্ষণ ধ্যান করেছিলেন। এখানে বসে তিনি ভারতের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দীর্ঘক্ষণ চিন্তা করেন। তারই স্মৃতিতে ১৯৭০ সালে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল কমিটি এখানে একটি স্মারকস্থল নির্মাণ করে।