নয়াদিল্লি: বিজ্ঞানের সিলমোহর না পড়লে আজকাল আর জাতে ওঠে না ধর্ম কিংবা আধ্যাত্মিকতা। তাই বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মচেতনার পারস্পরিক ‘নিবিড় সম্পর্ক’ নিয়ে প্রায়ই সওয়াল করতে দেখা যায় ধর্মীয় নেতা তো বটেই, এমনকি বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের একাংশকেও। কথাটা আবার শোনা গেল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতের (Mohan Bhagwat) মুখে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে (Delhi) এক অনুষ্ঠানে ‘আধ্যাত্মিকতা এবং বিজ্ঞানের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই’ বলে মন্তব্য করলেন আরএসএস (RSS)-এর সরসংঘচালক ভাগবত। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানের মতো আধ্যাত্মিকতাতেও কেবলমাত্র বিশ্বাসীরাই ন্যায়বিচার পান। যে মানুষ তাঁর সম্পত্তি ও জ্ঞান নিয়ে গর্বিত, তিনি ন্যায় পান না। বিশ্বাসের দুনিয়ায় অন্ধত্বের কোনও স্থান নেই। এটা জেনে রাখুন, একমাত্র কঠোর পরিশ্রম দিয়েই কেবল নিখাদ বিশ্বাস অর্জন করা যায়। ফাঁকিবাজি করে বিশ্বাস মেলে না।’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসে আয়োজিত লেখক মুকুল কানিৎকারের বই ‘বানায়ে জীবন প্রাণবান’-এর প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে আধ্যাত্মকিতা ও বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে নিজের মতামত পেশ করেন ভাগবত। কানিৎকারের বইটি ‘জীবনের মূল্যবোধ’ নিয়ে লেখা।
ভাগবত বলেন, ‘গত বিশ হাজার বছর ধরে স্রেফ অহংয়ে ভর করে পৃথিবী চলছে। ইন্দ্রিয় দিয়ে আমি যা জানি, সেটাই শেষকথা। তার বাইরে কিছু নেই। এই ধারণা নিয়েই মানুষ বিজ্ঞানের আবির্ভাবের পর থেকে জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু এটা পুরোপুরি সত্যি নয়। বিজ্ঞানেরও একটা সীমা রয়েছে। একে একমাত্র সত্য বলে মনে করা ভুল।’
এরপরই ভারতের ‘সনাতন সংস্কৃতি’র প্রসঙ্গ টেনে ভাগবতের বক্তব্য, ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির বিশেষত্ব হল বাহ্যিক পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনের সত্য অন্বেষণ করা। তাঁর কথায়, ‘আমরা গভীরে গিয়েছি এবং জীবনের সত্য উপলব্ধি করেছি। এই কারণে বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে।’