গাজোল: ২০১৯ এর তুলনায় এবার জয়ের মার্জিন সামান্য কমলেও প্রায় সব কটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করেছে বিজেপি। একমাত্র বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়া প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দেখা গিয়েছে পদ্মঝড়। গাজোল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় প্রতিটি বুথেই ব্যাপকভাবে লিড দেখা গিয়েছে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুর। আর এই জন্য গাজোল শহর এলাকার সকলকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন খগেন মুর্মু। পাশাপাশি গাজোল বিধানসভা এলাকার ভোটাররা গতবারের মতো এবারও তাকে আশীর্বাদ করায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সাংসদ।
অন্যদিকে, এই ফলাফলে হতাশ তৃণমূল নেতৃত্ব। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে মজবুত করতে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রে খগেন মুর্মুর লিড ছিল ৪১ হাজার ১৭১। এবার তা কমে হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৭১। তবে লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক লিড থাকলেও ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সেই লিড তলানিতে এসে ঠেকে। মাত্র ১৭৫৮ ভোটে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী চিন্ময়দেব বর্মন। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় তৃণমূল এবং বিজেপির। ছ’টি করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে উভয় দল। ত্রিশঙ্কু হয় তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৫টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ২৪ বিজেপি ১৮, জোট ২ এবং একটিতে নির্দল প্রার্থী জয়লাভ করে। তবে জেলা পরিষদের তিনটি আসনই যায় তৃণমূলের পক্ষে। সেই হিসেবে লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফলাফলের আশা করেছিল তৃণমূল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাজোলে সভা করতে এসে তৃণমূলকে জেতানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের ফল বেরোতেই দেখা গেল গতবারের জয়ের মার্জিন প্রায় ধরে রেখেছেন খগেন বাবু। আলাল, করকচ, দেওতলা, সাহাজাদপুর, বৈরগাছি ১ ও ২ এ কিছুটা লড়াই হলেও বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে দেখা গিয়েছে পদ্ম ঝড়। অক্সিলিয়ারি ধরে ২৬৯টি বুথের মধ্যে বিজেপির লিড ১৮৪টি বুথে। তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৭০টি বুথে এবং বাম কংগ্রেস জোট ১৫টি বুথে এগিয়ে রয়েছে।
খগেন বাবু জানান, বিভিন্ন এলাকার সুবিধা-অসুবিধাগুলিকে চিহ্নিত করে তা দূরীকরণের জন্য এখন থেকেই উদ্যোগ নেবেন। তার মধ্যে প্রধান কাজ গাজোল রেলস্টেশন রোডের মেরামতি। পাশাপাশি গাজোলবাসীর সুবিধার জন্য ফরাক্কা এক্সপ্রেসের গাজোল রেলস্টেশনে স্টপেজের জন্য রেল দপ্তরে তদ্বির করবেন। গাজোল বিধানসভা এলাকায় গতবারের মতো লিড পাবেন এই আশা তার ছিলই। এবারেও মানুষ তাকে আশীর্বাদ করেছেন।