চেন্নাই: ‘মাহি হ্যায় তো মুমকিম হ্যায়’। তেতাল্লিশের মহেন্দ্র সিং ধোনি গতকাল ফের তা আরও একবার বোঝালেন। ব্যাট হাতে নামলেও রান করার সুযোগ পাননি। উইনিং বাউন্ডারিতে ম্যাচে ইতি টেনে দেন রাচিন রবীন্দ্র। তবে তার আগে উইকেটকিপারের দায়িত্বে চেনা ঝলক, ক্ষিপ্রতা। বুঝিয়ে দিলেন চল্লিশের চালশেমি তাঁকে কাবু করতে পারেননি।
দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ের সঙ্গে মাহির স্পেশাল ডিআরএস কল। লো স্কোরিং ম্যাচে ছেয়ে থাকলেন। চার উইকেট নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে প্রায় একাই শেষ করে দেওয়া চেন্নাইয়ের আফগান স্পিনার নুর আহমদ বলেও দিলেন, সূর্যকুমার যাদবের উইকেটের কৃতিত্বও মাহিভাইয়ের প্রাপ্য।
মুগ্ধ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন তারকা মার্ক বাউচারের কথায়, এই বয়সে এমএস যা করছে তা আদপে রূপকথা। অবিশ্বাস্য। স্টাম্পিংয়ে এখনও সবার থেকে এগিয়ে ধোনিই। ওর বিকল্প কেউ নেই। রি-অ্যাকশন টাইমিং ছিল ০.১২ সেকেন্ড। সেটাই যথেষ্ট ছিল ধোনির জন্য। ম্যাচের পর যা নিয়ে প্রশংসা করেন সূর্যও।
আইপিএলে ফের মাহি-ম্যাজিকে যখন ক্রিকেটমহল মুগ্ধ, তখন ধোনির মুখে বিরাট কোহলি, রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের কথা। ম্যাচের পর সম্প্রচার সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ধোনি দাবি করেন, তিনি মোটেই দল চালাচ্ছেন না। ৯৯ শতাংশ সিদ্ধান্ত অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ই নিচ্ছেন। অযথা এই নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে।
বলেছেন, ‘দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রুতুরাজ। ঠান্ডা মাথার ছেলে। অধিনায়ক হিসেবে ওকে বেছে নেওয়ার এটাই কারণ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে রুতুরাজকে বলেও দিই, আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে দূরে থাকব। আর আমি পরামর্শ দিচ্ছি বলেই তা মেনে চলতে হবে এমনটা নয়।’ রুতুরাজের পাশে দাঁড়িয়ে ধোনি আরও বলেন, ‘মাঠের ৯৯ শতাংশ সিদ্ধান্তই রুতুরাজের। বোলার পরিবর্তন থেকে ফিল্ডিং সাজানো—সবকিছুই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমি সাহায্য করি মাত্র। দলকে দারুণভাবে পরিচালনা করছে রুতু।’
বিরাট কোহলির সঙ্গে সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন। জানান, শুরুর দিকে মূলত ক্রিকেট বিষয়ে ভাবনার বিনিময় হত। সম্পর্কটা ছিল অধিনায়ক ও দলের তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারের মতো। সময় যত এগিয়েছে, তা গাঢ় হয়েছে। বন্ধুত্ব তৈরি হয়। এখনও তা অটুট। অটুট সিনিয়ার-জুনিয়ার শ্রদ্ধার জায়গাও।
ক্রিকেট ছাড়ার পরও ‘বন্ধুর’ খারাপ সময়ে পাশে থেকেছেন। বিরাটও বলেছেন, একমাত্র ধোনিই তাঁকে মেসেজ করেছিলেন কঠিন সময়ে। কী লিখেছেন বার্তায়? কী কথা হয়েছিল দুজনের মধ্যে? ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে যা জানার উৎসাহ থাকলেও তা প্রকাশ্যে আনতে নারাজ মাহি। সাফ কথা, তিন বছর এই নিয়ে মুখ খোলেননি। আগামী দিনেও খুললেন না। দুজনের কথা, দুজনের মধ্যেই থাকুক।
মাহির কথায়, চেন্নাই সুপার কিংসের সতীর্থরাও তাঁকে এসে মনের কথা বলে। তাঁরা জানেন, সেই কথা বাইরে আসবে না। তৃতীয় কেউ জানবে না। এই বিশ্বাসটা গুরুত্বপূর্ণ। বিরাটের ক্ষেত্রে হোক বা অন্য কেউ, তা কোনওভাবে ভাঙতে রাজি নন।