পরাগ মজুমদার, নওদা: রবিনহুডের ‘হাত’ ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে ঘর ওয়াপসি অধীর চৌধুরী ঘনিষ্ঠ মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মধুর। জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদকের দল বদলের কথা সোমবার চাউর হতেই নওদা সহ মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলা জুড়ে শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক মহলে শোড়গোল তৈরি হয়।
সোমবার জেলা কংগ্রেসের (Congress) মুখপাত্র তথা অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত দাস সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ২১ এপ্রিল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে মোশারফ হোসেনকে। এখন থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। পালটা রাজনৈতিক শিবিরের দাবি, মোশারফ হোসেন যে তৃণমূলে (TMC) যাবেন সেটা বুঝেই আগেভাগে তাঁকে বহিষ্কার করল কংগ্রেস। মোশারফ-এর রাজনৈতিক উত্থান ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। কংগ্রেসের প্রতীকে নওদা থেকে জেলা পরিষদ আসনে জেতেন তিনি। কর্মাধ্যক্ষও হন। তবে ২০১৬ সালে কংগ্রেসের সিংহভাগ সদস্যকে দলে টেনে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। সেই সময়ই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মোশারফ। তৃণমূলের জেলা পরিষদ দখলের নেপথ্যে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল বলেই দাবি রাজনৈতিকমহলে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তৃণমূল পরিচালিত মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন মোশারফ হোসেন। তবে শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ত্যাগের পরে মোশারফ হোসেনের সঙ্গেও তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ে। এখানেই শেষ নয়, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে অধীর চৌধুরীর হাত ধরে নিজের পুরানো দল কংগ্রেসে ফেরেন। ২০২১ সালের ২০ মে অবধি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে।
কংগ্রেসে ফেরার পর দলে বাড়তি গুরুত্বও পান মধু। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে নওদা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়েন মোশারফ হোসেন। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে নওদায় তাঁর নেতৃত্বেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ে কংগ্রেস। তবে বেশ কয়েক মাস ধরেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল। এদিকে নওদার তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজ খান বলেন, ‘মঙ্গলবার তৃণমূলে ফিরছেন মোশারফ হোসেন মধু। শুধু মোশারফ নন, বিরোধী দলগুলির আরও বেশ কিছু পরিচিত মুখ তৃণমূলে যোগদান করছেন। এদিকে মধুর এই তৃণমূলে ফেরাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের নেতৃত্বের আশা, মুর্শিদাবাদ তথা নওদা ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি আরও বৃদ্ধি পাবে। মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘জেলায় কংগ্রেস কার্যত অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একমাত্র মুর্শিদাবাদে মানুষকে দিশা দেখাতে পারেন। তাই কেন্দ্রের সঙ্গে লড়তে একমাত্র তৃণমূলই ভরসা, কংগ্রেস নয়।’