নাগরাকাটাঃ একদিকে নাগরাকাটার চ্যাংমারি চা বাগানে দাপিয়ে বেড়াল ৩ বাইসন। অন্যদিকে মেটেলির জুরন্তি চা বাগানের এক শ্রমিকের উপরে হামলা চালাল চিতাবাঘ। মানুষ-বুনোর দ্বৈরথের ওই জোড়া ঘটনা ঘটল মঙ্গলবার। বন দপ্তরের খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল কুমার দে বলেন, ‘বাইসন ৩ টি কারও কোনও ক্ষতি করেনি। জুরন্তির আহত শ্রমিক বর্তমানে মালবাজারের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব আমরাই বহন করছি।’
বন দপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চ্যাংমারির লোয়ার ডিভিশনে এদিন দুপুরে একসঙ্গে ৩ টি বাইসনকে দেখতে পান শ্রমিকরা। খবর পেয়েই বন দপ্তরের ডায়না ও খুনিয়া রেঞ্জের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। দুটি বাইসন সন্ধ্যের দিকে জঙ্গলে ঢুকে গেলেও একটি বাইসন রাত পর্যন্ত চ্যাংমারির ফ্যাক্টরি লাগোয়া বাগানের সেক্সনে থেকে যায়। সেটি বিস্তর দৌড়োদৌড়িও করে বলে জানা গিয়েছে। ক্লান্ত হয়ে নাকি অন্য কোনও কারণে বাইসনটি গভীর রাত পর্যন্ত এলাকা ছাড়েনি তা পরিষ্কার নয়। পালা করে বনকর্মীরা ওই বুনোটির প্রতি নজর রেখে চলেছেন।
অন্যদিকে, জুরন্তি চা বাগানে চিতাবাঘের হামলার ঘটনাটি ঘটে ১৬ নম্বর সেকশনে। প্রমীনা তিরকী নামে এক শ্রমিকের ওপর জন্তুটি অতর্কিতে হামলা চালায়। সেসময় প্রমীনা কাঁচা পাতা তুলছিলেন। তিনি চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুরু করলে চিতাবাঘটি পালিয়ে যায়। ওই শ্রমিকের গলায় বুনোটি থাবা বসিয়ে দেয়। পরে অন্যান্য শ্রমিকরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বাগানের হাসপাতালে ও পরে মঙ্গলবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে সোমবার বানারহাটের আমবাড়ি চা বাগানেও চিতাবাঘের হামলায় এক শ্রমিক জখম হন। এদিন ওই বাগানটিতে গিয়ে বন দপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার বিন্নাগুড়ি রেঞ্জের কর্মীরা একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করেন। বিন্নাগুড়ির রেঞ্জার হিমাদ্রী দেবনাথ বলেন, ‘মানুষ-বুনোর সংঘাত রুখতে কি ধরনের সতর্কতা অবলম্বন জরুরী তা শ্রমিকদের সহজ সরল ভাষায় বুঝিয়ে বলা হয়।’
বন দপ্তর সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনের মধ্যে ডুয়ার্সের মালবাজার থেকে শুরু করে বিন্নাগুড়ি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার চা বাগানে চিতাবাঘের হামলায় পরপর বেশ কয়েকজন শ্রমিকের জখম হওয়ার ঘটনা ঘটল। হামলার বহর হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বন দপ্তর থেকে শুরু করে চা বাগানগুলিও।