বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: রাস্তা রয়েছে তবে কোনও নির্দিষ্ট নাম নেই। এমনই অবস্থা ময়নাগুড়ি (Mainaguri) শহরজুড়ে। এলাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং রাস্তার এখনও কোনও নামকরণ করা হয়নি। একইভাবে নামহীন হয়ে পড়ে আছে শহরের একটি খেলার মাঠও। কেবল ময়নাগুড়ি শহরের খেলার মাঠ বলেই সেটি সকলের কাছে পরিচিত। শহরের মূল কেন্দ্রস্থল হল ট্রাফিক মোড়। একে ঘিরেই রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম মোড়। এছাড়াও শহরে বিভিন্ন পাকা রাস্তা আছে। কোনও রাস্তা এবং মোড়ের সুনির্দিষ্ট নাম নেই বলেই দাবি শহরবাসীর। এলাকাবাসীরা মনে করতেন ময়নাগুড়ি পুরসভা তৈরি হওয়ার পর শহরটিকে নতুনভাবে সাজানো হবে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এবং মোড়ের নামকরণ করা হবে। তেমনই শহরের খেলার মাঠও নাম পাবে।
যদিও পুরসভা তৈরির পরে তিন বছরেরও কিছু বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত শহরে ঘুরে বেড়ালে ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত নাকি পুরসভা তা স্পষ্ট করে বোঝার উপায় নেই। ২০২১ সালের ৬ জুলাই ময়নাগুড়ি পুরসভার নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছিল। শহরের এক প্রবীণ বাসিন্দা নরেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘পুরসভার উচিত শহরকে সাজিয়ে তোলা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার নামকরণ করা। শহরের বহু গুণীজন রয়েছেন। মনীষীদের নামেও মোড় বা রাস্তার নামকরণ করা যেতেই পারে। তাতে শহরের আলাদা একটা মর্যাদা তৈরি হয়।’ এবিষয়ে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক চঞ্চল সরকারের দাবি, গোটা শহরের হালহকিকত আগে যা ছিল তাই রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘এই পুরসভা শহরকে সাজিয়ে তুলতে এবং নাগরিকদের সঠিক পরিষেবা প্রদান করতে পুরোপুরি ব্যর্থ।’
নাগরিক পরিষেবা চাঙ্গা করে তোলার পাশাপাশি শহরের রাস্তার কাজটাও পুরসভার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে জানিয়েছেন ময়নাগুড়ির প্রাক্তন ফুটবলার সন্তোষ ঘোষ। আরেক বাসিন্দা বিমল দাসের কথায়, ‘নতুন পুরসভা নাগরিক পরিষেবা দিতেই হিমসিম খাচ্ছে। স্থানীয়রা ভেবেছিলেন পুরসভা হওয়ায় শহরকে ঢেলে সাজানো হবে। তবে অধিকাংশ রাস্তার অবস্থাই বেহাল। দ্রুত সেগুলিকে মেরামত করে তারপর নামকরণ করলেই ভালো হয়।’
অন্যদিকে, পুরসভা মারাত্মক কর্মীসংকটে ভুগছে বলে জানা গিয়েছে। কাজ চালাতেও বেশ অসুবিধা হচ্ছে। মাত্র এক-দুজন স্থায়ী কর্মী এবং বাকি ৮–১০ জন অস্থায়ী কর্মীকে নিয়ে কোনওরকমে কাজকর্ম চলছে। ফলে নতুন করে কোনও পরিকল্পনা নিয়ে চাপ বাড়ানোর পরিস্থিতি নেই। পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী বলেন, ‘শহরকে সাজিয়ে তোলা এবং বিভিন্ন মোড় ও রাস্তার নামকরণ করা ভালো প্রস্তাব। তবে আর্থিক সমস্যা এবং কর্মী সংকট দুই-ই রয়েছে। এখনও পুরসভার কোনও স্থায়ী ইঞ্জিনিয়ার নেই। তবুও আমরা পরবর্তীতে পুরসভায় এই বিষয়ে আলোচনা করব।’