ব্রাসেলস: প্যারিস অলিম্পিকে পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিমের ৯২.৯৭ মিটারের অবিশ্বাস্য থ্রোয়ের পর ভারতের সোনার ছেলের বিশেষ কিছু করার ছিল না। সেদিন পেশির চোট নিয়ে চেষ্টার পরও সেকেন্ড বয় (রুপোজয়ী) হয়ে থাকতে হয়েছিল নীরজ চোপড়াকে।
শনিবার রাতে ডায়মন্ড লিগের ফাইনালসেও প্রতিকূলতা ছিল। ব্রাসেলসের ঠান্ডায় প্রতিটা থ্রোয়ের পর শরীর গরম রাখতে নীরজ সহ বাকি জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের মোটা জ্যাকেট পরতে দেখা গিয়েছে। তারপরও সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন অলিম্পিকে জোড়া পদকজয়ী নীরজ। কিন্তু আবারও দ্বিতীয়র গেরোয় আটকাতে হয়েছে তাঁকে। ঠিক গতবারের ডায়মন্ড লিগ ফাইনালসের মতো। শনিবার গ্রেনাডার অ্যান্ডারসন পিটার্সের কাছে হেরে যাওয়ার পর নীরজ জানিয়েছেন, ভাঙা হাত নিয়ে ডায়মন্ড লিগের ফাইনালসে নেমেছিলেন।
স্টার্টিং লিস্টে সাতজনের মধ্যে ছয় নম্বরে নাম ছিল নীরজের। ৮৬.৮২ মিটারের প্রথম থ্রো তাঁর খুব একটা ভালো হয়নি। সেখানে সাত নম্বরে এসে পিটার্স ৮৭.৮৭ মিটারের থ্রোয়ে নীরজের উপর চাপ বাড়িয়ে দেন। যার ফলে দ্বিতীয় থ্রোয়ে নীরজের বর্শা মাত্র ৮৩.৪৯ মিটার পৌঁছায়। যদিও সেটা তাঁকে দুই রাউন্ডের পর দ্বিতীয় স্থানেই রেখেছিল। তৃতীয় প্রয়াসে দিনের সেরা থ্রো আসে নীরজের হাত থেকে। তাঁর বর্শা ৮৭.৮৬ মিটার অতিক্রম করার পর চেনা আস্ফালনও দেখা গিয়েছিল নীরজের মধ্যে।
পরের তিন প্রয়াসে অবশ্য পিটার্সের সঙ্গে ০.০১ মিটারের ফারাক ভারতীয় তারকা ঘোচাতে পারেননি। তাই ষষ্ঠ থ্রোয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই নীরজকে হতাশ দেখাচ্ছিল। তলপেটের পেশির চোট অলিম্পিকের আগে থেকেই ভোগাচ্ছিল নীরজকে। সঙ্গে ব্রাসেলসে যোগ হয়েছিল ভাঙা বাঁ হাত। ফাইনালসের পর সামাজিক মাধ্যমে নিজের চলতি মরশুমের একগাদা ছবি পোস্ট করেন নীরজ। যারমধ্যে বাঁ হাতের এক্স-রে’র ছবিও রয়েছে। পরে এই প্রসঙ্গে নীরজ বলেছেন, ‘সোমবার অনুশীলনের সময় বাঁ হাতে চোট পেয়েছিলাম। এক্স-রে’তে দেখা গিয়েছিল, অনামিকার হাড় ভেঙেছে। মনে হয়েছিল, ফাইনালসে নামতে পারব না। কারণ হাতে প্রচণ্ড ব্যথা ছিল। কিন্তু আমার সাপোর্ট টিম হাল ছাড়েনি। বাঁ হাতে মোটা ব্যান্ডেজ নিয়ে ফাইনালসে নেমেছিলাম।’
অলিম্পিকের পরই নীরজ জানিয়েছিলেন, ডায়মন্ড লিগের ফাইনালস চলতি মরশুমে তাঁর শেষ প্রতিযোগিতা হতে চলেছে। যা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়ে ২৬ বছরের নীরজ বলেছেন, ‘এটাই আমার এবারের শেষ প্রতিযোগিতা ছিল। প্রত্যাশা অনুযায়ী মরশুমটা শেষ হল না। কিন্তু এই মরশুম আমাকে অনেককিছু শিখিয়েছে। আগামী বছর ১০০ শতাংশ ফিট হয়ে ফিরতে চাই। সারাবছর পাশে থাকার জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ। ২০২৪ আমাকে আরও ভালো অ্যাথলিট ও মানুষ হতে সাহায্য করেছে। ২০২৫ সালে দেখা হচ্ছে।’ আগামী বছর আরও ফিট ও শক্তিশালী নীরজকে দেখার অপেক্ষাতেই থাকবে আসমুদ্রহিমাচল।