খড়িবাড়িঃ একটা সময় ছিল যখন শিলিগুড়ির পর দ্বিতীয় ব্যবসার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল ভারত নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি। এই এলাকায় একটি দোকান থাকা মানেই প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা। সেই কারণে ওই এলাকার চা বাগানের জমি দখলে উঠে পড়ে লেগেছিল কিছু অসাধু ব্যক্তি। পানিট্যাঙ্কির রমরমা ব্যবসার লোভে তিন চারগুণ টাকা দিয়ে অনেকেই চা বাগানের জমি কিনে দোকান বানিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু এদিন পানিট্যাঙ্কিতে গিয়ে দেখা গেল ব্যবসায়ীদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ। লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে যারা জমি কিনে ব্যবসায় নেমেছিল তাঁদের এখন মাথায় হাত।
পানিট্যাঙ্কিতে রাস্তার উপরই মুদিখানার দোকান রয়েছে ৬৫ ছুই ছুই হোমনাথ সিংহের। তিনি এদিন দোকানে বসেই বলেন সব শেষ হয়ে গেল। করোনার পর পানিট্যাঙ্কিতে কোন অশুভ শক্তির নজর লেগেছে। কেনাবেচা সবই শেষ। বাজারেই রয়েছে দীপক চক্রবর্তীর সাইকেল দোকান। তিনি বলেন, আমার দোকানের অধিকাংশ ক্রেতা নেপালের। কিন্তু নেপাল সরকারের এক সিদ্ধান্তে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। নতুন মালের অর্ডার দেব কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছি। চারজন ছেলে দোকানে কাজ করে তাদের এখন বেতন দেওয়াই মুশকিল।
কিন্তু এমন পরিস্থিতি কেন? জানা গেল, আগে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কেনাকাটা করে ভারত থেকে নেপালে নিয়ে যেতে পারতেন নেপালের বাসিন্দারা। এর ফলে ভারত নেপাল সীমান্তবর্তী বাজারগুলি বেশ ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। কিন্তু সপ্তাহ দেড়েক আগে নেপাল সরকারের একটি সিদ্ধান্তে সীমান্তের এই বাজারগুলির ব্যবসায়ীদের উপর বজ্রঘাত পড়েছে। নেপাল সরকারের হঠাৎ করে শুল্ক বৃদ্ধিতে মাথায় হাত পড়েছে সীমান্তের ব্যবসায়ীদের। শুনশান হয়ে পড়েছে খড়িবাড়ি ব্লকের পানিট্যাঙ্কির বাজার। মূলত এই বাজার নেপালের ক্রেতাদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত ১৭ জুলাই নেপাল সরকারের অর্থমন্ত্রক দ্বারা জারি করা নির্দেশিকায় চারিদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী ভারত থেকে ১০০ টাকার জিনিসপত্র ক্রয় করে নিয়ে গেলেও চড়া শুল্ক দিতে হবে। এর ফলে সীমান্ত এলাকার গোটা বাজার শুনশান হয়ে পড়েছে। শুধু ব্যবসায়ীরা নয় এই এলাকার কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসল নেপালে নিয়ে গেলে চড়া শুল্ক দিতে হচ্ছে। এর ফলে গত দেড় সপ্তাহ ধরে নেপালে জিনিসপত্র না যাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে সীমান্তের ব্যবসা বাণিজ্য।
করোনাকালের পর দ্বিতীয়বার সীমান্তের ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে। কেনাকাটা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে কোমর ভেঙে পড়েছে এই এলাকার কৃষক এবং দোকানদারদের। পানিট্যাঙ্কি এলাকায় প্রায় ১৫ একর চা বাগানের জমিতে ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ দোকানদার রয়েছে। গত দেড় সপ্তাহ ধরে অনেক ব্যবসায়ী ঝাপ বন্ধ করে দিয়েছে। শুভলাল সিংহ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে অনেকেই কাজ হারাতে চলেছেন। এর ফলে সীমান্তে চোরাচালান বৃদ্ধি পাবে। পানিট্যাঙ্কিতে এমনিতেই মাদকের ব্যবসা ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে। এখন দোকানপাঠ বন্ধ গেলেও আরও বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত প্রায় ৯৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। মিরিকের পশুপতি এবং খড়িবাড়ি ব্লকের পানিট্যাঙ্কিতে রয়েছে চেকপোস্ট। এর মধ্যে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কে পানিট্যাঙ্কির গুরুত্ব অনেকটা। নদীর ওপারে কাঁকরভিটা ছাড়িয়ে ঝাপা জেলার অনেক গ্রাহক পানিট্যাঙ্কি বাজারে নিয়মিতভাবে জিনিস কিনতে আসেন। যদিও গত ১৭ জুলাই থেকে নেপালের বাসিন্দারা ভারত থেকে ১০০ টাকার উপর জিনিসপত্র ক্রয় করে নিয়ে গেলেই সেখানকার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কড়াকড়ি শুরু করেছে। নেপাল সরকারের এই সিদ্ধান্তে গত দেড় সপ্তাহ ধরে কাঁকড়ভিটা এলাকায় ক্ষোভ বিক্ষোভ চলছে। পানিট্যাঙ্কি ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক দীপক চক্রবর্তী বলেন, নেপাল থেকে ভারতীয়রা যেমন কোন জিনিস ক্রয় করে আনতে পারেন না, এইজন্য জিএসটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ঠিক তেমনি নেপাল সরকারও একই নীতি নিয়েছে। এতদিন পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নেপাল সরকার ছাড় দিয়েছিল। যার ফলে ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যে ফুলে ফেঁপে উঠছিল।
চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার: সিএনজি বাস (CNG Bus) এসে পড়ে রয়েছে। অথচ উত্তরবঙ্গে ওই বাস পরিষেবা…
সামসী: বাইক চালানো শিখতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক কিশোরের। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া-১…
আলিপুরদুয়ার: কালজানি নদীর (Kaljani river) বোরোলি মাছ গত তিন-চারদিন হল সামান্য পরিমাণে হলেও মৎস্যজীবীদের জালে…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ব্যস্ত সময়ে স্টেশনে উপচে পড়ছে ভিড়। ঠিক সে সময় ঘটে গেল…
কোচবিহার: কোচবিহারে (Cooch Behar) ব্যবসায়ীদের ডাকা বনধকে সমর্থন জানাল সিপিএম (CPM)। বুধবার সিপিএমের তরফে একটি…
তুফানগঞ্জ: উচ্চমাধ্যমিকে (HS Result 2024) নজরকাড়া ফল চিলাখানা হাইস্কুলের (Chilakhana High School) ছাত্র রসিদুল হকের।…
This website uses cookies.