প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লিঃ রণদীপ হুডার ‘সাভারকার’ নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসু। এদিন টুইট করে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেছেন, “সাভারকারকে নিয়ে সিনেমা বানান তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু ভুলেও ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করবেন না।’ ‘সাভারকার’ সিনেমার অভিনেতা-পরিচালক রণদীপ হুডার প্রতিই তাঁর এই সতর্ক বার্তা, যা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। প্রশ্ন উঠেছে রণদীপ হুডার প্রতি কেন চন্দ্র বসুর এই অগ্ন্যুদগার?
সম্প্রতি, রণদীপ হুডা অভিনীত এবং পরিচালিত ‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকার’ ছবির টিজার মুক্তি পেয়েছে। সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে ছবিটির পোস্টারও। ওই পোস্টারের ছবি সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে পোস্ট করেন অভিনেতা। সেই পোস্টের ক্যাপশনে অভিনেতা-পরিচালক লেখেন, ‘ব্রিটিশের মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তি ছিলেন এই ভারতীয়। যিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভগৎ সিং, এবং ক্ষুদিরাম বসুদেরও অনুপ্রাণিত করেছিলেন। সেই বীর সাভারকারের অজানা জীবনকথা আসছে শীঘ্রই।’ রণদীপের এই পোস্টের পরেই শোরগোল পড়ে। টিজারেও রয়েছে একই বক্তব্য। দেশজুড়ে এর প্রতিবাদে সরব হন তারকা জগতের একাংশ।
নেতাজি, ভগৎ সিং, ক্ষুদিরামদের অনুপ্রেরণা নাকি সাভারকার! বলিউড অভিনেতা রণদীপ হুডার এমন মন্তব্যে বিতর্ক চরমে। বেজায় ক্ষুব্ধ বসু পরিবারও। বলাই বাহুল্য এই জাতীয় মন্তব্যেই চটেছেন নেতাজি পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। তিনি টুইট করে বলেন, ‘নেতাজি ও সাভারকরের আদর্শ অভাবনীয় ভাবে বিপরীত। ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। বাক স্বাধীনতা মানে ইতিহাসকে বিকৃত করা নয়। আজকের প্রজন্মকে ভুল শেখানো হচ্ছে। সেন্সর বোর্ড কীভাবে পাশ করাচ্ছে এসব?’ চন্দ্র বসু এও বলেন, ‘সাভারকরকে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। এটা সাংঘাতিক ক্ষতি করছে ভুল ইতিহাস প্রচার করে।’ নেতাজির আদর্শের সঙ্গে সাভারকারের আদর্শের কোনও মিল নেই তা একটা বাচ্চা ছেলেও জানে, বলছেন চন্দ্র বসু।
তিনি আরও বলেন, ‘নেতাজির নিজস্ব লেখা রয়েছে তাঁর অসম্পূর্ণ জীবনী ইন্ডিয়ানস স্ট্রাগল-এ। সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে সাভারকার এবং জিন্নার থেকে কিছুই আশা করা যায় না। আমি যদি বলতেও চাই নেতাজি ও সাভারকরের ভাল বন্ধুত্ব ছিল আমি সেটা কি করে বলব। নেতাজির তো নিজের লেখা রয়েছে। তাই দয়া করে আর ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাবেন না। বরং ইতিহাসটা ভালো করে জেনে নিয়ে কাজ করুন।’