নাগরাকাটা: ঠিক কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করলে স্বাদ ও গন্ধের সেরা সিটিসি চা মেলা সম্ভব তা যাচাই করে বলে দেবে চা গবেষণা সংস্থার (টিআরএ) উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রের মডেল টি ফ্যাক্টরি। আগামী ১ অগাস্ট থেকে দেশের চা গবেষণার শেষ কথা হিসেবে পরিচিত সংস্থার নাগরাকাটা কেন্দ্রে ওই নয়া মডেল টি ফ্যাক্টরির পথ চলা শুরু হচ্ছে। বড় সিটিসি ফ্যাক্টরির আধুনিক ক্ষুদ্র সংস্করণের এমন ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গে এই প্রথম। এর ফলে চা বাগানগুলি উচ্চ গুণগতমানের চা উৎপাদনের পথে সঠিক দিশা পেয়ে দারুণভাবে উপকৃত হবে বলেই মনে করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। উত্তরের চা শিল্পের মরা গাঙে জোয়ার আনতে মডেল টি ফ্যাক্টরি গেম চেঞ্জারের ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও অনেকের অভিমত।
টিআরএ-র চেয়ারপার্সন নয়নতারা পালচোধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই মডেল টি ফ্যাক্টরি চালুর তৎপরতা অব্যাহত ছিল। প্রত্যেকের মিলিত প্রচেষ্টায় অবশেষে তা আলো দেখতে চলেছে। চা বাগানগুলিতে মিশ্র প্রজাতির বা নানা ধরনের ক্লোনের গাছ রয়েছে। কি ধরনের উৎপাদন কৌশল নিলে ক্লোন বা প্রজাতি ভেদে সবচেয়ে ভালো মানের চা মেলা সম্ভব সেটাই মডেল টি ফ্যাক্টরির মাধ্যমে বোঝা সম্ভব হবে।
চা মহল জানাচ্ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কুফল এসে পড়ছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পেও। কখনও খরা পরিস্থিতি আবার কখনও অতিবৃষ্টি। রয়েছে দিন-রাতের তামপাত্রার ক্রমবর্ধিত ব্যবধান। এসবের সরাসরি কুপ্রভাব এসে পড়ছে চা গাছের ওপর। টিআরএ-র মডেল টি ফ্যাক্টরির মাধ্যমে নানা ধরনের পরিস্থিতির শিকার চা গাছের দুটি পাতা একটি কুঁড়িকে ঠিক কিভাবে প্রক্রিয়াকরণ করলে ভালো মানের চা মিলতে পারে সেটা পরীক্ষামূলক উৎপাদনের পর জানিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। বাগানগুলিও সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারবে।
টিআরএ-র উত্তরবঙ্গ কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মহেন্দ্র বানসাল বলেন, ‘ধরা যাক একটি বাগানে এমন প্রজাতির গাছ রয়েছে যা অত্যন্ত ভালো মানের সিটিসি চা দিতে সক্ষম। উৎপাদনের ক্ষেত্রে শুধু সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে না পারার কারণে ওই অ্যাডভান্টেজ হয়তো বাগানটি নিতে পারছে না। ঠিক কী পদক্ষেপ নিলে উৎকর্ষে ভরা সিটিসি চা মেলার সেই সুবিধা বাগানটি পেতে পারবে সেটা মডেল টি ফ্যাক্টরির মাধ্যমে বোঝা সম্ভব হবে। ওই টিআরএ-কর্তার সংযোজন, যে গাছের কুঁড়ি ভালো চা দিতে সক্ষম সেটা চিহ্নিত হয়ে গেলে ওই গাছের সংখ্যাও বাগানগুলি বাড়াতে পারবে। এটাও চা শিল্পের ভবিষ্যতের নিরিখে মস্ত বড় একটি পাওনা হবে। টিআরএ-র তরাই শাখার অ্যাডভাইসারি অফিসার ডঃ তৃণা মণ্ডল বলেন, ‘ক্লোনিং কিংবা বীজ থেকে প্রাপ্ত এই দুই ধরনের চা গাছ বাগানগুলিতে থাকে। ক্লোনাল গাছেরও আবার প্রচুর প্রজাতি রয়েছে। একেক ধরনের গাছের কাঁচা পাতা থেকে তৈরি চা উৎপাদনের সঠিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিও একেক রকম। কাঁচা পাতা থেকে তৈরি চা উতপাদনের পথে উইদারিং, রোলিং, ফার্মেন্টেশন, ড্রায়িং ও ফায়ারিং-এর মতো নানা পক্রিয়াকরণের ধাপ রয়েছে। মডেল টি ফ্যাক্টরির মাধ্যমে সেই ধাপগুলোর সঠিক সময়ক্ষণ ও তাপমাত্রা-আদ্রতা কতটা রাখতে হবে সেটা বোঝা সম্ভব হবে।
চা বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মডেল টি ফ্যাক্টরির উৎপাদন ক্ষমতা স্বাভাবিক কারণেই কম রাখা হয়েছে। মাত্র ১৫০-১৬০ কিলোগ্রাম কাঁচা পাতা দিয়েও চা তৈরি সম্ভব। ক্ষুদ্র আকারের উৎপাদনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের সবকটি স্তরের ওপর নিবিড়ভাবে লক্ষ্য রাখা সম্ভব হবে। সেরা ফল পাওয়ার জন্য প্রয়োজনে পদ্ধতির অদল বদলও চটজলদি করে নেওয়া সম্ভব হবে। ফ্যাক্টরির যন্ত্রাংশ দেশের নানা প্রান্ত থেকে আনা হয়েছে বলে টিআরএ সূত্রের খবর।
এদিকে ফ্যাক্টরিতে চা উৎপাদনের আধুনিক কৌশলের ওপর টিআরএ-র নাগরাকাটা কেন্দ্রে আগামী ২ থেকে ৪ অগাস্ট পর্যন্ত বাগানগুলির পরিচালকদের নিয়ে একটি কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে চা রসায়নের নানা দিক নিয়ে সহজ সরল ভাষায় বিজ্ঞানীরা আলোচনা করবেন।
শিলিগুড়ি: নিট (NEET) ও নেট (NET) পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও ব্যাপক অনিয়মের প্রতিবাদে পথে নামল অখিল…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির জলসংকট (Delhi Water Crisis) সমাধানের দাবিতে সরব বিজেপি। শনিবার এই…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যৌন কেলেঙ্কারিতে (Sex scandal) ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন জেডিএসের বহিষ্কৃত সাংসদ তথা…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রীষ্মকালে আম, লিচুর পাশাপাশি কাঁঠালের চাহিদা বেড়ে যায়। অনেকেই এই ফল…
করণদিঘি: বন্ধুদের সঙ্গে নাগর নদীতে (Nagar River) স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেল ১৯ বছরের এক…
শিলিগুড়ি: কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয় এক শ্রমিকের। সেই মৃত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের দাবিতে শনিবার হুলুস্থুলু কাণ্ড…
This website uses cookies.