তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গবেষণা করার সুযোগ পেলেন শিলিগুড়ির (Siliguri) নিশীথ বর্মন। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে (IISC) ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ’ (Energy Research) বিভাগে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সেখানে জুনিয়ার রিসার্চ ফেলো হিসেবে যোগ দেবেন খুব তাড়াতাড়ি। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের পোখাইজোতের এই তরুণ মার্গারেট সিস্টার নিবেদিতা ইংলিশ স্কুলের প্রাক্তনী। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং’ নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পান। তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময় গেট (গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং)-এ ২৭৫ র্যাংক করেন। স্নাতক স্তরের চতুর্থ বর্ষে তাইওয়ানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ আসে নিশীথের কাছে।
একের পর এক সাফল্য নিয়ে নিশীথের কথা, ‘তাইওয়ানে ইন্টার্নশিপ করার সময় গবেষণার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। অনেক রকমের বই এবং গবেষণাপত্র পড়েছি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার সময় ল্যাবরেটরিতে কাজ করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছিলাম, উদ্ভাবনী চিন্তাধারার প্রতি আমার ঝোঁক বেশি। কীভাবে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করা যায়, তার খোঁজে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছি ল্যাবে।’ নিশীথ ফোনে জানালেন, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি মাদ্রাজ থেকে অ্যাপ্লাইড মেকানিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
নতুন জিনিসের খোঁজ ছাড়াও সময় পেলেই তিনি লিখে ফেলেন কবিতা। অবসর সময়ে গান গাইতে এবং শুনতে পছন্দ করেন। নিশীথের কথায়, ‘আইটি সেক্টরে কাজ করার ইচ্ছে আমার কোনওদিন ছিল না। গবেষণা করে নতুন কিছু উদ্ভাবনের প্রতি আগ্রহ বরাবর। আইআইএসসি-র মতো প্রথমসারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরও অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাব বলে আশা করছি।’ নিশীথের কৃতিত্বে গর্বিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ কমলকৃষ্ণ মণ্ডল। নতুন প্রজন্মের প্রতি শিলিগুড়ির কৃতী সন্তানের বার্তা, ‘পড়াশোনায় ফাঁকিবাজি করা চলবে না। যতটুকু সময় পড়বে, সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। একইসঙ্গে নিজের ভালোলাগার বিষয়গুলোকে নিয়ে চর্চা চালাতে হবে অবসর সময়ে। আমি তো সময় পেলেই ক্রিকেট খেলি এবং টিভিতে ম্যাচ দেখি।’
ছেলের স্বপ্নপূরণে খুশি তাঁর বাবা অনন্ত বর্মন ও মা সন্ধ্যা বর্মন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মতো নিশীথের কৃতিত্বে গর্বিত মার্গারেট সিস্টার নিবেদিতা ইংলিশ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।