মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ট্রেনে সফর অনেক সময়ই হয়ে ওঠে চিন্তার। যেমনটা হল কোচবিহারের মানিক শিকদারের সঙ্গে। তাঁর ব্যাগ খোয়া যায়। অভিযোগ, সেই চুরির পিছনে রয়েছে এক নাবালক ‘কাঙালি’। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার থেকে নিউ জলপাইগুড়ি কিংবা মালদার ট্রেন রুটে এক ছবি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সন্দেহের তির ওই কাঙালিদের দিকে। একাধিক চুরি, মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়ছে কাঙালিদের একাংশ।
কামরা সাফাই করে একদল নাবালককে টাকা চাইতে দেখা যায়। স্থানীয়দের কাছেই ওরাই ‘কাঙালি’ নামে পরিচিত। কীভাবে ওই খুদেদের একাংশ অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ছে তা ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে।
উত্তরবঙ্গের (North Bengal) বিভিন্ন রুটে মাদক পাচারে এই কাঙালিদের ব্যবহার করছে দুষ্কৃতীরা। সম্প্রতি বিহারের কিশনগঞ্জ থেকে ব্রাউন সুগার নিয়ে আসার কাজে জড়িয়েছে এনজেপির (NJP Railway Station) কাঙালিদের একটি দল। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রেল পুলিশ সুপার কূঁয়র ভূষণ সিং। জিআরপির এক আধিকারিকের কথায়, ‘বহুদিন থেকেই এই সমস্ত শিশু ও নাবালকের দেখভালের ব্যবস্থা করছে জিআরপি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, বাইরের জগতে ওদের মন বসে যাওয়ায় সুশৃঙ্খল বন্দি জীবনে ফিরতে চাইছে না।’
মানিক জানালেন, দিনকয়েক আগেই ডিব্রুগড়-হাওড়া কামরূপ এক্সপ্রেসে চেপে মালদা যাওয়ার সময় সিটের নীচে রাখা তাঁর ব্যাগটি খোয়া যায়। তাঁর দাবি, ওই ব্যাগ চুরির পিছনে এনজেপি স্টেশনের এক কাঙালি রয়েছে। ওই ঘটনার কয়েকদিন পরে ট্রেনের জানলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে মোবাইল নিয়ে দৌড়ে পালায় আরেক নাবালক। ফোনের মালিক ব্যাগপত্র নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন এনজেপিতে। এনজেপি জিআরপি-আরপিএফে তিনি অভিযোগ জানালে এক নাবালককে চিহ্নিত করা হয়। ওই নাবালকটি একটি দোকানে ফোনটি বিক্রি করেছে বলে জানায়। নাগরাকাটার বাসিন্দা ফুলচান নাইক ২৭ ডিসেম্বর ভোরে এনজেপিতে পৌঁছান। কাঙালি দলের সঙ্গে ওই স্টেশনের বাইরে মদ্যপান করেন ফুলচান। নেশা চড়তেই ফুলচানকে মেরে নগদ টাকা, সোনার গয়না, মোবাইল ছিনতাই করে পালায় ওই দল। অপরাধে যুক্ত এই কাঙালিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনকে আরও তৎপরতা দেখাতে হবে বলে রেলযাত্রীদের মত।