অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: যেখানে বছরে অন্তত ২টা পেরন্টস-টিচার মিটিংয়ের (Parents-teacher meeting) প্রয়োজন রয়েছে বলে জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ সেখানে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের পর আর সেরকম কোনও মিটিংই হয়নি সদর ব্লকের নেতাজি বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে। মাঝে পরীক্ষার শেষে ছাত্রছাত্রীদের খাতা ও নম্বর দেখার জন্য ডাকা হলেও অভিভাবকদের সঙ্গে কোনও মিটিং হয়নি। ড্রপআউট বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতে যখন পেরন্টস-টিচার মিটিংয়ে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিডিও তখন ওই স্কুলের এরকম পরিস্থিতিতে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে।
বৃহস্পতিবার সদর ব্লকের ৩০টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে হওয়া বৈঠকে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের বিডিও মিহির কর্মকার অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মিটিংয়ে আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন। ঠিক তার পরের দিনই নেতাজি বিদ্যাপীঠে গিয়ে একই কথা বলেন তিনি।
বিডিওর কথায়, ‘গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান, বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সদস্য সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষার পরে একটি পেরন্টস-টিচার মিটিংয়ের আয়োজন করতে বলা হয়েছে৷ সেদিন আমিও উপস্থিত থাকব। শিক্ষকদের তরফে আগামী সপ্তাহের শুক্রবার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সময় নির্বাচন করতে হবে। সদর ব্লকের অন্যান্য স্কুলগুলোতেও পরিদর্শন করে বিষয়টি দেখা হবে৷’
অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের মিটিং প্রায় অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নৈব নৈব চ অবস্থায় বলে সুত্রের খবর। এর ফলে অনেক সময় সরকারি অনেক ধরনের প্রকল্প সম্পর্কে অভিভাবকরা সঠিক সময়ে জানতে পারছেন না। এনিয়ে বিডিও নেতাজি বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের শিক্ষকদের মিশন বাৎসল্য প্রকল্প ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের জানানোর নির্দেশ দেন।
ড্রপআউটের ক্ষেত্রে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের সংখ্যা বেশি থাকছে বলে জানা গিয়েছে। ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মোট ২৯৩। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৪০০। পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন ৬ জন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সঞ্জীব সাহার কথায়, ‘বিডিওর নির্দেশে আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে মিটিংয়ের ব্যবস্থা করব। ফেব্রুয়ারির পর আর মিটিং ডাকা হয়নি। আমরাও চাই আমাদের বিদ্যালয়ের ৩৫ জন ড্রপআউট ছাত্র স্কুলমুখী হয়ে পরীক্ষায় বসুক৷’ শিক্ষাবন্ধু তাপস দে সরকার বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ পড়ুয়াই শীতের প্রাক মরশুমে এবং বর্ষায় মাঠের কাজে ব্যস্ত থাকে। এতে কিছু টাকা রোজগার হয়। অন্যান্য সময়েও দেখা যায় অনেকে রোজগারের তাগিদে অন্য পেশায় নিযুক্ত হয়ে যাচ্ছে।’