সানি সরকার, শিলিগুড়ি: কখনও মেঘ তো পরক্ষণই সূর্যের চোখরাঙানি। মেঘ দেখে বৃষ্টির আশার মাঝেই ঘাম ঝরছে অনবরত। রোদের মধ্যে রওনা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া বা কোনও শেডের নীচে আশ্রয় নিয়ে বৃষ্টি বিরতির অপেক্ষাও করতে হচ্ছে। ফলে সময়টা কি বর্ষার, প্রশ্ন উঠছে কয়েকদিন ধরেই। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির জেরে উত্তরের (North Bengal Weather) আকাশে আবহাওয়ার যে পরিবর্তন ঘটছে, তাতে মনে হচ্ছে দুয়ারে গ্রীষ্ম। এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন যে এখনই হচ্ছে না, সেই বার্তা রয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, ‘বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ায় ও মৌসুমি অক্ষরেখার পূর্ব প্রান্তের অবস্থান বদল ঘটায় উত্তরবঙ্গে তেমন লো ক্লাউড নেই। বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টি হলেও, তা সর্বত্র না হওয়ায় তাপমাত্রা বাড়ছে। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টির কোনও সতর্কতা নেই।’
‘বৃষ্টি বিরক্তি’ ছিল ক’দিন আগেই। টানা বর্ষণে নাজেহাল হওয়া উত্তরবঙ্গবাসী চাইছিলেন বৃষ্টির বিরতি। বর্ষার শুরুর বৃষ্টি কতটা ভয়াবহ করে তুলেছিল উত্তরের পাঁচটি জেলাকে, তা পাহাড় থেকে সমতলের বিভিন্ন জায়গার ক্ষতচিহ্নে স্পষ্ট। কিন্তু বৃষ্টি থামতেই যেভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে, তাতে এখন আবার সকলের প্রত্যাশায় বৃষ্টি। বৃষ্টি যে হচ্ছে না, তা নয়। তবে বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে বৃষ্টি (Rain Forecast) হওয়ায় তা সর্বত্র হচ্ছে না। ফলে তাপমাত্রাও নামছে না। বরং বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়ছে দিনের পর দিন। আর তাতে ঘাম যেমন ঝরছে, তেমনই শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে মূলত শিশু এবং প্রবীণদের। শনিবার সন্ধে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দার্জিলিং (১০.০ মিলিমিটার) এবং শিলিগুড়ির (২.৩ মিলিমিটার) বাইরে উত্তরবঙ্গের কোথাও বৃষ্টি হয়নি। দার্জিলিং বা শিলিগুড়ির (Siliguri Weather) সর্বত্র যে বৃষ্টি হয়েছে, তা নয়। ফলে যে এলাকাগুলি বৃষ্টিহীন ছিল, সেখানে ঘাম ঝরেছে সাধারণের।
রবিবার থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যেহেতু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে এবং ওডিশা উপকূলের দিকে যাচ্ছে, ফলে দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় রবিবার থেকে বৃষ্টি হলেও উত্তরের ‘কপাল পুড়বে’। কেননা, সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টির সময় আশপাশ এলাকার মেঘ টেনে নিয়ে শক্তি সঞ্চয় করে। পরবর্তীতে শক্তিশালী নিম্নচাপের জেরে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টি দেখা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না। কিন্তু ‘রিটার্ন গিফট’ বা মেঘের প্রত্যাবর্তন উত্তরের আকাশে কবে ঘটবে, তা রবিবার পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। বরং আগামী চারদিন যে ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই, তা আবহাওয়ার দপ্তরের পূর্বাভাসে পরিষ্কার। অর্থাৎ ঘাম আরও ঝরবে।