উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন বয়স বাড়লে কর্মদক্ষতা কমে। তাই প্রত্যেক পেশার পাশাপাশি রাজনীতিতেও বয়সের ঊর্ধসীমা থাকা উচিৎ। দলের সেনাপতির এই মতের সঙ্গে একমত নন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ তথা আইনজীবী নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়েস হলেই যে ক্রিজ ছাড়তে হবে তেমনটা মনে করছেন না সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রবীন নেতার বক্তব্য, বয়স নয়, মানুষের যোগ্যতাই ফ্যাক্টর।
তৃণমূলের ‘বৃদ্ধতন্ত্র’ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সম্প্রতি নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে তৃণমূলের একটি সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ছবি না থাকায় প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেই মঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের পুরনো প্রবীণ নেতাদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছিলেন। কুণাল বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বুঝিয়ে পদে থেকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেক প্রবীণ নেতা। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের নিশানা করেই একথা বলেছেন কুণাল।
এই ‘বৃদ্ধতন্ত্র’ প্রসঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে, সাংসদ বলেন, ‘৯০ বছরের শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়ের কি কোর্টে প্রোডাক্টিভিটি কমেছে? অনিন্দ্য মিত্র ব্যারিস্টার। তাঁর বয়স ৮৭। প্রোডাক্টিভিটি কমেছে? বয়স ফ্যাক্টর নয়। মানুষের যোগ্যতাই হলো ফ্যাক্টর।’ তিনি নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তিনি নিজেও মধ্য ষাটে। তা সত্ত্বেও আইনজীবী এবং সাংসদ হিসাবে কাজ করছেন দক্ষতার সঙ্গেই। রাজনীতির ময়দানেও নিয়মিত রয়েছেন। সাংসদের কথায়,’ফিজিক্যালি ফিট এবং মেন্টালি অ্যালার্ট-এটাই গাইডলাইন হওয়া প্রয়োজন।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রবীণদের অভিজ্ঞতা প্রতিটা দলেই প্রয়োজন। কিন্তু একটা বয়সের পর প্রোজাক্টিভিটি কমে। তাই ক্রিকেট বা রাজনীতি সবক্ষেত্রেই বয়েসের ঊধ্বসীমা থাকা দরকার।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা বয়সসীমা থাকা দরকার বলে আমি মনে করি। ষাট-পঁয়ষট্টি কিংবা সত্তর-পঁচাত্তর হোক, এই উপরে আর রাজনীতি করা উচিত নয়। মানুষ বছরে অবসর নেয়। সরকারি বা বেসকরারিক অফিসে মানুষ এর বেশি কাজ করে না। রাজনীতিও সেরকম ভাবেই করা দরকার।’