কলকাতা : প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতা শহরে বাসের সংখ্যা কম থাকা নিয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ওপর প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই সোমবার রাস্তায় বাসের অবস্থা খতিয়ে দেখতে সল্টলেক তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে যান পরিবহণমন্ত্রী। এই নিয়ে পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হয়। সেখানেই সামনে এসেছে, মূলত চালক ও কনডাক্টরের অভাবেই শহরে অতিরিক্ত বাস চালানো যাচ্ছে না। সাধারণত দুটি শিফটে বাস নামানো হয়। কোনও কোনও সময় তিনটে শিফটেরও প্রয়োজন হয়। কিন্তু তার জন্য যতজন চালক ও কনডাক্টরের প্রয়োজন, তা নেই। তার ফলে শহরে পর্যাপ্ত বাস থাকছে না। ইতিমধ্যেই চালক ও কনডাক্টরের শূন্যপদে নিয়োগ করার জন্য নবান্নকে আবেদন জানিয়েছে পরিবহণ দপ্তর।
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম ও পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমে চালকের সংখ্যা কম। সেই কারণেই বেশি সংখ্যক বাস নামাতে সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা কীভাবে কাটানো যায়, তা ভাবা হচ্ছে।’
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থায় এই মুহূর্তে ১৩৩০ জন চালকের প্রয়োজন। কিন্তু তাদের হাতে রয়েছে ৮৮০ জন চালক। ফলে আরও ৪৫০ জন চালকের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ১৩৩০ জন কনডাক্টরের পদ খালি থাকলেও হাতে রয়েছে ৯৫৬ জন। অর্থাৎ ৩৭৪ জন কনডাক্টর কম রয়েছে। চালক ও কনডাক্টর মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণে ৮২৪ জন নিয়োগের প্রয়োজন।
একইভাবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থারও ২০০ জন চালক ও কনডাক্টরের প্রয়োজন। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমেরও প্রায় ৪৫০ জন চালকের প্রয়োজন আছে। এই মুহূর্তে প্রতিদিন কলকাতা শহর ও শহরতলিতে ৫৫০টি বাস নামায় পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম। চালক পাওয়া গেলে প্রতিদিন ৭০০ বাস চালানো যাবে বলেই নিগমের কর্তারা মনে করছেন।
এছাড়াও তিন নিগমের ২০৯ জন কনডাক্টরকে নিগমের অফিসের কাজে ব্যবহার করতে হচ্ছে। ১০০ জন চালককে গ্যারাজ, ওয়াশিং ইনচার্জ কাজে রাখা হয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন চালককে দিয়ে শহরে ছোট ছোট রুটে ছোট বাস চালাতে পাঠানো হয়। এই চালকদের মধ্যে অনেকে স্থায়ী চালক ছিলেন। তাঁদের অনেকেরই অবসর নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই আরও বেশি সংখ্যায় বাস চালাতে স্থায়ী বা অস্থায়ী পদে চালক ও কনডাক্টর নিয়োগ করতে নবান্নের অনুমতি চেয়েছে পরিবহণ দপ্তর।